‘মির্জা ফখরুলকে কেনা যায় না’

আওয়ামী লীগ একটা প্রোপাগান্ডা দল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: স্টার

'বাংলাদেশের রাজনীতি এমন একটি জায়গায় চলে গেছে, এটাকে আমরা বলি নষ্ট সময়, নষ্ট রাজনীতি। কত টাকা আছে তাদের? লক্ষ-কোটি টাকার মালিক হয়েছে জনগণের সম্পদ-ব্যাংক লুট করে। কিন্তু তাদের বুঝতে হবে যে মির্জা ফখরুলকে কেনা যায় না। মির্জা ফখরুল বিক্রি হয় না। তারা সবাইকে নিজেদের মতো বিক্রয়যোগ্য পণ্য মনে করে। মির্জা ফখরুলরা টাকার জন্য রাজনীতি করেন না, তাদের কেনা যায় না।'

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে চিকিৎসা সহায়তা নেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আজ রোববার সিঙ্গাপুর থেকে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকার চেক ইস্যু করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল ও তার স্ত্রীর ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ছবি ছড়িয়ে দাবি করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

গত ২৪ আগস্ট বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান। তার সঙ্গে রয়েছেন তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম ও মেয়ে মির্জা সামারুহ।

মির্জা ফখরুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটি আওয়ামী লীগের একটি পরিকল্পিত প্রোপাগান্ডা। আমরা আন্দোলন করছি। সরকার নিপীড়ন-নির্যাতন করে এই আন্দোলন কোনোভাবেই দমন করতে পারছে না। দেশের মানুষ এই আন্দোলনে আরও বেশি সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছেন। তাই সরকার নানা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনকে বিপথগামী করার জন্য, বিভ্রান্ত করার জন্য, নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য এই কাজটি তারা করছে। তারা খুব পরিকল্পিতভাবেই এই কাজগুলো করে, সেটাই করছে। তাদের কাজই গুজব তৈরি করা, তাদের কাজই মানুষের চরিত্র হনন করা।'

আমরা অতিমানব নই যে আমাদের অসুখ-বিসুখ থাকবে না।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি

এটাকে 'খুবই সস্তা প্রোপাগান্ডা' উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'তারা একটা অপশক্তি। অপশক্তির যে কাজ, সেটাই তারা সারা জীবন করেছে, এখনো সেই কাজটিই করছে। এটা নিয়ে খুব বেশি কিছু বলতেও আমার রুচিতে বাধে। দেশের মানুষ জানে, এরা প্রোপাগান্ডা চালানোর মেশিন। এরা প্রোপাগান্ডা চালাবে এবং তাদের কোনো প্রোপাগান্ডাই দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না।'

'এটা দেখে আমি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাইনি। কারণ, আমি জানি যে এটা নোংরা রাজনীতি। আপনারা একটা জিনিস খেয়াল করলে দেখবেন, প্রোপাগান্ডার মধ্যেই এর মিথ্যার সাক্ষ্য আছে', যোগ করেন তিনি।

আজ রাত ৯টার দিকে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান 'রিউমার স্ক্যানার' তাদের ফেসবুক পেজে লিখেছে, 'প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৫০ লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে মির্জা ফখরুলের বিদেশ ভ্রমণ দাবিতে ভাইরাল চেকটি ভুয়া।' প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নাম ও নম্বরের মিল না থাকাসহ একাধিক কারণ দেখিয়ে চেকটিকে 'ভুয়া' বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, 'এমন একটি বিষয়ে কথা বলাও আমার জন্য লজ্জার। আমার খুবই লজ্জা লাগছে যে এই দেশে আমি রাজনীতি করি। আপনারা যখন এমন কোনো সস্তা প্রোপাগান্ডার বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তখন বুঝতে পারি না যে কী বলা উচিত।'

চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, '৩ বার কোভিড হওয়ার পরে আমার ফুসফুসে খুব খারাপ একটা রোগ হওয়ার বিষয়ে ঢাকার চিকিৎসকরা সন্দেহ করছিলেন। তারাই আমাকে সিঙ্গাপুরের একজন চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে বলেছেন, তাই এসেছি। আর আমার স্ত্রীও ক্যানসারে আক্রান্ত, তার আবার কেমোথেরাপি শুরু হবে। তাই এখানে যে চিকিৎসক তাকে দেখেছিলেন, তার সঙ্গে আবার একটু পরামর্শ করে নিতে এসেছি।'

পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনকে বিপথগামী করার জন্য, বিভ্রান্ত করার জন্য, নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য এই কাজটি তারা করছে। তারা খুব পরিকল্পিতভাবেই এই কাজগুলো করে, সেটাই করছে। তাদের কাজই গুজব তৈরি করা, তাদের কাজই মানুষের চরিত্র হনন করা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি

তিনি আরও বলেন, 'এখন না এসে আমার উপায়ও ছিল না। কারণ সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাচ্ছিলাম না। নইলে এই সময়ে সিঙ্গাপুরে আসার কথা না আমার।'

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং মির্জা আব্বাসও চিকিৎসার জন্য বর্তমানে সিঙ্গাপুরে রয়েছেন

বিষয়টিকে 'কাকতালীয়' উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, 'পরে তো দেশ থেকে আরও বের হওয়া যাবে না। এ জন্যই হয়ত তারাও এই সময়টাকে বেছে নিয়েছেন চিকিৎসার জন্য।'

'আমরা অতিমানব নই যে আমাদের অসুখ-বিসুখ থাকবে না', যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Effective tariff for RMG exports to US climbs to 36.5%: BGMEA

The tariff will be a bit less if 20% of the cotton used in garment production is sourced from the USA

2h ago