রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভের সঙ্গে যা নিয়ে আলোচনা হতে পারে

বাংলাদেশে রুশ মন্ত্রীর সফর
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। ছবি: রয়টার্স

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বৃহস্পতিবার ঢাকায় আসছেন। 'সর্বোত্তম, সবচেয়ে সাশ্রয়ী' মূল্যে বাংলাদেশে বেশ কিছু কৃষিপণ্য সরবরাহ করতে আগ্রহী রাশিয়া।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা রুশ মন্ত্রীর সফরকে ঘিরে এই তথ্য জানিয়েছেন।

রাশিয়া জি-টু-জি (দু দেশের সরকারি পর্যায়ে চুক্তি) ভিত্তিতে বিভিন্ন খাদ্য পণ্য, যেমন: হলুদ, মটর, ছোলা, লাল মসুর, সবুজ মসুর ডাল ও সূর্যমুখী তেল সরবরাহে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা সম্প্রসারণে আগ্রহী।

বাংলাদেশ যদি এই সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতা উন্নয়নে আগ্রহী হয়, তাহলে রাশিয়ানরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে।

রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আলোকে বাংলাদেশ সম্ভবত অর্থপ্রদানের সমস্যাগুলোতে ফোকাস করবে, কারণ অফারটি দামের ক্ষেত্রে খুব সাশ্রয়ী মনে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ৭ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফর করবেন।

আজ বিকেল সোয়া ৪টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন তাকে স্বাগত জানাবেন।

নগরীর একটি হোটেলে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর রাত ৮টায় যৌথভাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন তারা।

বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

সফরকালে রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা।

তিনি বলেন, দুই পক্ষ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়েও মতবিনিময় করবে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে তারা খাদ্য, সার, জ্বালানি ও রোহিঙ্গা সংকটের মতো বিষয় নিয়েও আলোচনা করতে পারেন।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, 'ইউক্রেন সংকটের পর থেকে বিশ্বজুড়ে যে জটিল পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, আমরা তা নিয়ে আলোচনা করব। আমাদের যে সমস্যাগুলো আছে, সেগুলো আমরা তুলে ধরব।'

রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ইউক্রেন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য রাশিয়াকে অনুরোধ করতে পারে বাংলাদেশ।

ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস জানিয়েছে, দুই দেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মতামত বিনিময় করবে।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, লাভরভের সফরে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপন করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'তিনি যেদিন এখানে আসবেন সেদিন আমাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুসহ আমাদের অনেক দ্বিপক্ষীয় বিষয় আলোচনা করার আছে।'

বাংলাদেশ সফর শেষ করে ৯ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন লাভরভ।

এর আগে গত বছরের নভেম্বরে ২২তম আইওআরএ মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে লাভরভের বাংলাদেশ সফরের কথা ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে সফরটি স্থগিত করা হয়।

দিল্লিতে লাভরভ দুটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৯ সেপ্টেম্বর ওয়ান প্ল্যানেট অধিবেশনে টেকসই উন্নয়ন ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা এবং ১০ সেপ্টেম্বর ওয়ান ফিউচার অধিবেশনে গণতন্ত্রীকরণের মূল কাজগুলোর ওপর জোর দেবেন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর ভূমিকাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি ডিজিটাল রূপান্তর বাস্তবায়নের ওপর জোর দেবেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Why Dhaka has become unliveable

To survive Dhaka, you need a strategy. Start by embracing the absurd: treat every crisis as a plot twist.

11h ago