অ্যান্টার্কটিকা থেকে অসুস্থ গবেষককে উদ্ধার করেছে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্টার্কটিক প্রোগ্রামের (এএপি) আইসব্রেকার জাহাজ নুয়িনা। ছবি: এএপি থেকে নেওয়া
অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্টার্কটিক প্রোগ্রামের (এএপি) আইসব্রেকার জাহাজ নুয়িনা। ছবি: এএপি থেকে নেওয়া

অ্যান্টার্কটিকার একটি দুর্গম গবেষণা স্টেশন থেকে একজন অসুস্থ গবেষককে সফলভাবে উদ্ধার করেছে অস্ট্রেলিয়া। গত সপ্তাহে এই গবেষকের কাছে পৌঁছানোর জন্যে একটি জরুরী উদ্ধার অভিযান শুরু করে দেশটি।

অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্টার্কটিক প্রোগ্রাম (এএপি) এক বিবৃতিতে জানায়, গবেষকটিকে তাদের আইসব্রেকার (বরফ ভেঙে এগিয়ে যেতে পারে এমন জাহাজ) আরএসভি নুয়িনাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পরবর্তীয় পর্যায়ে উন্নত চিকিৎসার জন্যে গবেষককে তাসমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। 

তবে এই গবেষক কী রোগে আক্রান্ত, সে  সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

গবেষণা কেন্দ্রটিতে চিকিৎসা সুবিধা সীমিত। শীতকালে সবচেয়ে বৈরি ও বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতিতে সেখানে প্রায় ২০ জনের মতো মানুষ বাস করে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বরফে ঢাকা এই মহাদেশে অভিযানটি পরিচালনার জন্য উদ্ধারকারী চিকিৎসক দল, ১টি বড় আইসব্রেকার জাহাজ এবং ২টি হেলিকপ্টারের প্রয়োজন হয়েছে।

জাহাজটি গবেষকটির কাছে পৌঁছানোর জন্য ৩ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছে। রোববার এটি ক্যাসি গবেষণা স্টেশনের যথেষ্ট কাছাকাছি চলে আসলে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধারকারী চিকিৎসক দল মোতায়েন করা হয়।

উদ্ধার অভিযানের প্রথম পর্যায় সম্পন্ন হওয়ার পর জাহাজটি আগামী সপ্তাহে হোবার্ট শহরে ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এএপি-এর রব ক্লিফটন জানান, 'অসুস্থ গবেষককে নুইনারের বিশেষভাবে সজ্জিত ও পরিকল্পিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় আমাদের পোলার মেডিসিন ডাক্তার ও রয়্যাল হোবার্ট হাসপাতালের মেডিকেল কর্মীরা দেখাশোনা করবেন।'

'এই অভিযাত্রীকে তাসমানিয়ায় প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবার জন্য ফিরিয়ে নেওয়াকে আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি', যোগ করেন তিনি।

এএপি আরও জানিয়েছে, গবেষকের পরিবারকে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে সার্বক্ষণিক তথ্য দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, স্টেশনে থাকা অন্যান্য সব কর্মীদের খোঁজ রাখা হচ্ছে এবং তারা নিরাপদ আছেন।

হেলিকপ্টারের মাধ্যমে গবেষককে উদ্ধার করা হয়। ছবি: এএপি থেকে নেওয়া
হেলিকপ্টারের মাধ্যমে গবেষককে উদ্ধার করা হয়। ছবি: এএপি থেকে নেওয়া

সাধারণত অ্যান্টার্কটিকায় পাঠানোর আগে অস্ট্রেলিয়া সব গবেষকের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে থাকে।

অ্যান্টার্কটিকা পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম অঞ্চলের অন্যতম। এরকম দুর্গম জায়গা থেকে কাউকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা প্রায়ই বেশ জটিল, ব্যয়বহুল ও বিপদসঙ্কুল হয়। তাই এসব ক্ষেত্রে অনেকসময় আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া অন্য কোনো দেশের সহায়তা ছাড়াই সফল হয়েছে।

শুধু আকাশপথে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব ছিল না। ক্যাসির কাছাকাছি উইলকিন্স অ্যারোড্রোমে একটি বরফাচ্ছাদিত রানওয়ে থাকলেও প্রচন্ড শীতে এটি প্রায়ই ব্যবহারের অনুপযোগী থাকে।

প্রতিবেদন মতে, এই রানওয়ে ব্যবহার করার জন্য অন্তত কয়েক সপ্তাহের প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। তাই আইসব্রেকার জাহাজ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন আহমেদ বিন কাদের অনি

তথ্যসূত্র: বিবিসি

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

9h ago