মরক্কোর ভূমিকম্পে বিলীন হয়ে গেল যে গ্রাম

মরক্কো ভূমিকম্প
ছবি: এএফপি

মরক্কোর ইতিহাসে ছয় দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় বিলীন হয়ে যাওয়া একটি গ্রামের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে অতি সাবধানে এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন অনুসন্ধানকারীরা।

ওমর আইত বারেক (২৫) নামের যে যুবকের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ওই নারীর, সেই ওমর তখন অশ্রুসজল চোখে ওই উদ্ধার তৎপরতা দেখছিলেন। অ্যাটলাস পর্বতমালা থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরের ওই গ্রামটিতে উদ্ধারকাজ চলার সময় চারপাশে ভিড় করে ছিল আরও অনেক লোকজন।

গত শুক্রবার গভীর রাতে যখন ভূমিকম্প শুরু হয় তখন ওমর তার বাগদত্তা মিনা আইত বিহির সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। ভূমিকম্প শুরু হলে ফোনের লাইন কেটে যাওয়ার আগে তিনি রান্নাঘরের মেঝেতে বাসন পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পান। ওমর তখনই বুঝতে পারেন যে তিনি মারা গেছেন। 

ওমর এএফপিকে জানান, এ ঘটনায় তিনি নিজেও আহত হয়েছেন।

মিনার সঙ্গে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল ওমরের। মরদেহ উদ্ধারের পর মিনাকে যে অস্থায়ী কবরস্থানে দাফন করা হয়, সেখানে ততক্ষণে আরও ৬৮ জনকে কবর দেওয়া হয়েছে।

উদ্ধারকারীরা খুব সাবধানে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মরদেহ উদ্ধারের সময় মিনার ব্যবহৃত মোবাইলটি খুঁজে পেলে তা শোকার্ত ওমরের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

তিখত গ্রামে তার বাড়ির চারপাশে ছিল আরও শতাধিক পরিবার। সেখানে এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভাঙাচোরা ইট-পাথর, কাঠ ও কংক্রিট।

৩৩ বছর বয়সী মহসিন আকসুম বলেন, 'আমার সব শেষ হয়ে গেছে।' যিনি ওই গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামটি এখন প্রায় নিশ্চিহ্ন।

আশেপাশের অন্যান্য গ্রামের মতো এ গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি তৈরি হয়েছে ইট-পাথর ও কাঠ দিয়ে।

উদ্ধার কাজ চলার সময় বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। তাদের অনেকে মনে করতে পারছিলেন না, এর আগে সবশেষ কবে তারা ওই অঞ্চলে ভূমিকম্প হতে দেখেছেন।

২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী আবদেল রহমান এজাল বলেন, 'এখানকার মানুষ তাদের বাড়িঘর তৈরির সময় ভূমিকম্পের কথা চিন্তা করেনি। এ সব বাড়ি তৈরিতে খুব ভালো মানের নির্মাণ উপকরণও ব্যবহার হয়নি।'

রাতের খাবারের পর তিনি যখন হাঁটতে বেরিয়েছিলেন, তখন ভূমিকম্প শুরু হয়ে। সে সময় তিনি ধসে পড়া বাড়িঘর থেকে বাসিন্দাদের তাড়াহুড়া করে বের হতে দেখেন।

তিনি নিজের বাবাকে তাদের বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে টেনে বের করে আনেন। নিজেও গুরুতর আহত হন এবং পরে তার বাবা সেখানেই মারা যান।

 

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh Police: Designed to inflict high casualties

A closer look at police’s arms procurement records reveals the brutal truth behind the July killings; the force bought 7 times more lethal weapons than non-lethal ones in 2021-23

8h ago