বাংলাদেশ

মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে লাভরভের মন্তব্যের জবাবে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

‘সহিংসতা বা ভয়ভীতি ছাড়াই সাংবাদিকদের কাজ করতে দিতে হবে। এবং সরকারকে জবাবদিহি করার চেষ্টা করে যাওয়া সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর বাংলাদেশ সরকারের পদ্ধতিগত এবং ব্যাপক নিপীড়নের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন,’ বলেন তিনি।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র
নিয়মিত প্রেস বিফ্রিংয়ে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভের ঢাকা সফর এবং সফরকালীন বাংলাদেশে মার্কিন হস্তক্ষেপের বিষয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে নিয়মিত প্রেস বিফ্রিংয়ে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিফ্রিংয়ে এক সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, মস্কো এই অঞ্চলে মার্কিন আদেশ ও হস্তক্ষেপ প্রতিষ্ঠার যে কোনো প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করবে বলে মন্তব্য করেছেন লাভরভ। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া কী জানতে চাইলে মিলার বলেন, 'আমি সম্মানের সঙ্গে রাশিয়াকে বলব, যে দেশ তার দুটি প্রতিবেশী দেশকে আক্রমণ করেছে, যারা এখনও (ইউক্রেনে) আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে এবং সেখানে তারা প্রতিদিন স্কুল, হাসপাতাল এবং আবাসিক ভবনগুলোতে বোমা হামলা চালাচ্ছে, তাদের অন্য কোনো দেশের ওপর আদেশ চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কথা বলা উচিত নয়।'

'এটি মোটামুটিভাবে—সের্গেই লাভরভের করা সবচেয়ে আত্মসচেতন মন্তব্য নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির ক্ষেত্রে আমি বলব, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে অবাধ ও উন্মুক্ত, সংযুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ এবং স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের অভিন্ন লক্ষ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এটাই আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের উদ্দেশ্য এবং এটাই আমাদের অবস্থান,' বলেন তিনি।

গত ৯ সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে কথোপকথনের বিষয়ে জানতে চাইলে ম্যাথু মিলার বলেন, 'প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেসব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সে বিষয়ে হোয়াইট হাউস বিস্তারিত প্রকাশ করেছে বলে আমি বিশ্বাস করি।'

বাংলাদেশের দুই সিনিয়র সাংবাদিক—শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং নিউইয়র্কে নির্বাসিত এক সাংবাদিকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, 'যে কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সাংবাদিকরা অপরিহার্য ভূমিকা পালন করেন। তাদের কাজ দুর্নীতি উন্মোচন করে, জনসাধারণের তথ্য জানার অধিকার রক্ষা করে। মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয় সে সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার সুযোগ দেওয়া দরকার। তাদের নির্বাচিত নেতাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। যেমন–আপনারা সবাই এখানে সে আমি এখানে প্রতিদিন যা বলি সেটির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেন।

'সহিংসতা বা ভয়ভীতি ছাড়াই সাংবাদিকদের কাজ করতে দিতে হবে। এবং সরকারকে জবাবদিহি করার চেষ্টা করে যাওয়া সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর বাংলাদেশ সরকারের পদ্ধতিগত এবং ব্যাপক নিপীড়নের ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন,' বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে প্রেস বিফ্রিং করেন লাভরভ। সেসময় তিনি বলেন, মস্কো এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের হস্তক্ষেপ প্রতিষ্ঠার যে কোনো প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করবে।

তিনি আরও বলেন, 'যদি আমরা পরিস্থিতির দিকে তাকাই এবং বিশ্লেষণ করি তবে আমরা স্পষ্ট দেখতে পাবো যে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা তথাকথিত ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ব্যবহার করে এই অঞ্চলে তাদের স্বার্থ প্রচার করার চেষ্টা করছে। তাদের লক্ষ্য স্পষ্টতই চীনকে প্রতিহত করা। এবং এই অঞ্চলে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করে তোলা।'

Comments

The Daily Star  | English
Antisemitism Awareness Act

Column by Mahfuz Anam: End of intellectual freedom on US campuses?

The passage of Antisemitism Awareness Act is the most direct attack on the principles and values of the First Amendment in the US.

7h ago