ইউএনওর নির্দেশে ইমাম চাকরি হারানোর পর ডিসির আদেশে সমঝোতা

ইউএনও মো. ফোরকান এলাহি অনুপম আজ রোববার বিকেলে ভাটরা কাচারি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে গিয়ে ইমাম আবুল বাশারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার লালমাইয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে এক ইমামের চাকরিচ্যুতির অভিযোগের পর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে বলে জানা গেছে।

অভিযোগ আছে, নামাজের আগে সরে দাঁড়াতে বলায় গত শুক্রবার উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের ভাটরা কাচারি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম আবুল বাশারকে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দেন ইউএনও মো. ফোরকান এলাহি অনুপম।

বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে আজ রোববার দুপুরে জেলার ইমাম ও খতিবরা কুমিল্লার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যান।

জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলা প্রশাসক বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছেন। ইউএনও  ইমামের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ইমাম আবুল বাশার তার চাকরিতে বহাল আছেন।'

এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পংকজ বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, 'জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ইউএনও অনুপম ও ইমাম-খতিবদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা বিষয়টি সমাধান করেছি। লালমাইয়ের ইউএনও নিজেই ইমাম সাহেবের সঙ্গে ভাটার মসজিদে নামাজ আদায় করতে যাবেন। ইউএনও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। চাকরিচ্যুতির বিষয়টি ঠিক না।'

জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুরে ভাটরা কাচারি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে খুতবা শেষে জুমার নামাজ শুরুর আগে ইউএনওকে সরে দাঁড়াতে বলেন ইমাম বাশার। এতে ক্ষুব্ধ হন ইউএনও অনুপম।

পরে তিনি নামাজ শেষে ইমামকে ডেকে কোরআন-হাদিসের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করেন এবং এক পর্যায়ে ইমামকে চাকরিচ্যুত করতে মসজিদ কমিটিকে নির্দেশ দেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেদিন নামাজ শেষে ইউএনও মসজিদের মুয়াজ্জিন ও ইমামকে পুকুর ঘাটে ডাকেন। পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল্লাহকেও ডেকে ইমামকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন ইউএনও। 

গতকাল ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল্লাহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'ইমামের দক্ষতার অভাব আছে। আমি মসজিদ কমিটিকে বলেছি, ইমামকে বাদ দিতে। তারা ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে কাজটা ঠিক করেনি।'

পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ওই এলাকার স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। 

আজ রোববার বিকলে ইউএনও, মসজিদ কমিটি, ইমাম বাশার ও স্থানীয়দের নিয়ে সভা করে জেলা প্রশাসন।

যোগাযোগ করা হলে ইমাম আবুল বাশার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা তো ইউএনও মহোদয়কে চিনি না। মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ পড়তে আসেন। নামাজ শুরুর আগে ডান-বাম দেখে লাইনে দাঁড়ানোর জন্য সবসময়ই বলা হয়। নামাজ শেষে তিনি আমাকে ও মুয়াজ্জিনকে ডেকে নেন। এরপর বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। পরে শুনি আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।'

জনাতে চাইলে ইউএনও মো. ফোরকান এলাহি অনুপম ইমামকে চাকরিচ্যুতির কথা অস্বীকার করে বলেন, 'ইমামকে আমি চাকরিচ্যুত করিনি।'

যোগাযোগ করা হলে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইউএনও ইমামের চাকরি খেয়েছেন, এটা ঠিক না। বিষয়টি নজরে আসার পর আমরা খতিয়ে দেখেছি।'

Comments

The Daily Star  | English
corruption-extortion-illustration-biplob-chakroborty

‘Now it’s our turn’ mindset fuelling abuse of power: TIB

While reforms are publicly touted, an ongoing culture of dominance, illegal occupation, and extortion resulting from "power abuse" by certain political parties is undermining public aspirations to build a democratic "New Bangladesh", it says

31m ago