ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনা

ঢাকায় কাজে ফেরা হলো না হীরা বেগমের

মোবাইল স্ক্রিনে হীরা বেগমের ছবি দেখাচ্ছিলেন তার চাচা আবু তালেব। ছবি: স্টার

তিন দিন আগেই ছুটি নিয়ে কিশোরগঞ্জে বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন হীরা বেগম (২৬)। আজ সোমবার ঢাকায় ফেরার পথে ভৈরবে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন তিনি।

স্বজনরা বলছেন, এগারসিন্দুর গোধুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে হীরার সঙ্গে তার স্বামী ও দুই বছরের ছেলে থাকলেও তারা প্রাণে বেঁচে গেছেন।

আজ সন্ধ্যায় ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে হীরা বেগমের মরদেহ বুঝে নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন তার চাচা আবু তালেব। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, হীরা ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। কিশোরগঞ্জ স্টেশন থেকে স্বামী-সন্তানসহ ট্রেনে উঠেছিলেন তিনি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে উপস্থিত হীরার আরেক স্বজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'রেলওয়ের অবহেলার কারণেই এমন একটি দুর্ঘটনা ঘটল। এতগুলো প্রাণ ঝরে গেল। দেশের সম্পদ নষ্ট হলো।'

এই মূহুর্তে সেখানে আরও অনেকে নিখোঁজ স্বজনের খোঁজ পেতে ভিড় করেছেন। স্বজন হারানোর আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে সেখানকার বাতাস।

আজ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেন ও একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত  ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আউটার স্টেশনে একটি মালবাহী ট্রেন পেছন দিকে থেকে ধাক্কা দিলে এগারসিন্দুর এক্সপ্রেসের দুটি বগি যাত্রীসহ উল্টে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ট্রেনের নিচে এখনো মানুষ চাপা পড়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্ত কোচগুলোতে অনেকেই আহত অবস্থায় পড়ে আছে। উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি হাত লাগিয়েছেন স্থানীয়রাও।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে মালবাহী ট্রেনের সিগন্যাল না মানার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বরখাস্ত করা হয়েছে মালবাহী ট্রেনের লোকোমাস্টার, সহকারী লোকোমাস্টার ও গার্ডকে। গঠন করা হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি।

দুর্ঘটনার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-কিশোরগঞ্জ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

42m ago