আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে তৃতীয় জয় আফগানদের

সেমি-ফাইনালের স্বপ্নটা আরও জোরালো করল আফগানিস্তান

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে তৃতীয় জয় আফগানদের

মূল কাজটা করছিলেন বোলাররাই। দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই রাখেন তারা। এরপর বাকি কাজ সারেন ব্যাটাররা। তাতে আরও একটি দারুণ জয় পেল আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কাকে সহজেই হারিয়ে সেমি-ফাইনালের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখল দলটি। চলতি বিশ্বকাপে এটা আফগানদের টানা দ্বিতীয় এবং সবমিলিয়ে তৃতীয় জয়।

সোমবার পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে আইসিসি বিশ্বকাপের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আফগানিস্তান। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৩ ওভারে ২৪১ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। জবাবে ২৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে হাশমতুল্লাহ শাহিদির দল।

এর আগে পাঁচ ম্যাচে দুটি করে জয় ছিল আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা দুই দলেরই। সেমি-ফাইনালের স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে তাই দুই দলের জন্যই ম্যাচটি ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ লড়াইয়ে জিতে প্রথমবারের মতো সেমিতে খেলার স্বপ্নে বিভোর আফগানিস্তান। পয়েন্ট তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে তারা। শেষ তিন ম্যাচে জয় পেলে ভাগ্যের শিকে খুলতেও পারে দলটির।

তবে হারলেও সেমির স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়নি শ্রীলঙ্কার। এখনও তিনটি ম্যাচ রয়েছে তাদের। সেই তিন ম্যাচে জিতলে এবং অন্য দলগুলোর ফলাফল পক্ষে গেলে সেমিতে খেলতে পারে ১৯৯৬ সালের চ্যাম্পিয়নরা। তবে বাস্তব দৃষ্টিতে তা খুব কঠিন। ফলে এক অর্থে বিদায় নিশ্চিত তাদের।

আগে ব্যাট করে লক্ষ্যটা বড় দিতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। তবে ছোট পুঁজিতে শুরুটা দারুণ পেয়েছিল তারা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই আফগানদের অন্যতম ভরসা রহমানুল্লাহ গুরবাজকে তুলে নিয়েছিল দলটি। অসাধারণ এক ইনসুইঙ্গারে তাকে বোল্ড করে দেন দিলশান মাদুশাঙ্কা। রানের খাতাই খুলতে পারেননি গুরবাজ।

কিন্তু সেই চাপ ধরে রাখতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। এরপর আরেক ওপেনার ইব্রাহীম জাদরানের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ সামলে নেন রহমত শাহ। দ্বিতীয় উইকেটে ৭৩ রানের জুটি গড়েন তারা। ব্যক্তিগত ৩৯ রানে ইব্রাহীমকে ফিরিয়ে এ জুটিও ভাঙেন মানুশাঙ্কা। তবে অধিনায়ক হাসমতুল্লাহর সঙ্গে ৫৮ রানের আরও একটি জুটি গড়ে কাসুন রাজিথার শিকার হন রহমত। এর আগে ৭৪ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৬২ রান করেন তিনি।

এরপর বাকীটা কেবলই হতাশার গল্প লঙ্কানদের জন্য। আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের সঙ্গে ১০৪ বল স্থায়ী অবিচ্ছিন্ন ১১১ রানের জুটিতে ম্যাচ জিতেই মাঠ ছাড়েন আফগান অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ। ৭৪ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক। ৬৩ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ৭৩ রান করেন ওমরজাই।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সেট ব্যাটারদের ইনিংস লম্বা করতে না পারার কারণেই পুঁজিটা বড় করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। অথচ পাথুম নিসাঙ্কা ও সাদিরা সামারাবিক্রমার সঙ্গে দুটি জুটিতে ২ উইকেটে রান উঠেছিল ১৩৪। কিন্তু এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কানরা। যে কারণে কোনো মতে ২৪১ রান সংগ্রহ করে দলটি

দলীয় ২২ রানেই ওপেনিং জুটি ভাঙে লঙ্কানদের। ফজলহক ফারুকির বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন কুশল পেরেরা। এরপর নিসাঙ্কা ও সামারাবিক্রমার সঙ্গে দুটি দারুণ জুটি গড়েন অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। নিসাঙ্কার সঙ্গে ৭৭ বলে ৬২ রান যোগ করার পর তৃতীয় উইকেটে সামারাবিক্রমার সঙ্গে ৫৭ বলে ৫০ রান যোগ করেন তিনি। তাতেই বড় পুঁজির স্বপ্ন দেখছিল লঙ্কানরা।

তবে আশা দেখালেও সেট তিন ব্যাটারই করেছেন হতাশ। ইনিংস লম্বা তো দূরের কথা, এমনকি হাফসেঞ্চুরিও পূরণ করতে পারেননি কেউ। ব্যক্তিগত ৪৬ রানে ওমরজাইয়ের বলে উইকেটরক্ষক গুরবাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান নিসাঙ্কা। তার এই স্কোরই ইনিংসের সর্বোচ্চ।

তবে লঙ্কান শিবিরে বড় ধাক্কাটা ২৮তম ওভারে এসে দেন মুজিব উর রহমান। ইনফর্ম ব্যাটার মেন্ডিসকে ফিরিয়ে দেন তিনি। তাকে অতিরিক্ত ফিল্ডার নজিবুল্লাহ জাদরানের ক্যাচে পরিণত করেন এই স্পিনার। ৫০ বলে ৩৯ রান করেন মেন্ডিস। শুধু তাই নয়, পরের ওভারে ফিরে আরেক সেট ব্যাটার সামারাবিক্রমাকে ফেলেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। তার ব্যাট থেকে আসে ৩৬ রান।

পাঁচ রানের ব্যবধানে দুই সেট ব্যাটার কে হারিয়ে বড় চাপে পড়ে যায় লঙ্কানরা। সে চাপ থেকে আর উতরে উঠতে পারেনি দলটি। এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। রশিদ খানের গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে যান তিনি। পারেননি চারিথ আসালাঙ্কাও। তবে শেষ দিকে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটিতে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন মহেশ থিকসানা। শেষদিকে থিকসানা ২৯ ও ম্যাথিউজ ২৩ রান করেন।

আফগানদের পক্ষে ৩৪ রানের খরচায় ৪টি উইকেট পান ফারুকি। ২টি শিকার মুজিবের।

Comments

The Daily Star  | English
US attack on Iran nuclear sites

Iran denounces US attack as ‘outrageous’

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

10h ago