আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

একটাও ইতিবাচক দিক মিলছে না

আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরুর পর বিশ্বকাপে টানা ছয় ম্যাচ হেরে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। মঙ্গলবার ইডেন গার্ডেন্সে প্রতিপক্ষের কাছে পাত্তাই পায়নি সাকিব আল হাসানের দল। 

কলকাতা থেকে

একটাও ইতিবাচক দিক মিলছে না

বিশ্বকাপে বাংলাদেশ

একটা সময় ছিল যখন বড় সব হারের দিনেও খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করা হতো কোন ইতিবাচক দিক। সান্ত্বনা পুরস্কার হিসেবে সেই দিকটা গায়ে মেখে অস্বস্তি তাড়ানোর প্রয়াস চলত তীব্র। সেই দিন পার হয়ে গেছে আগেই। মানুষের প্রত্যাশার পারদ আর বাস্তবতার চাহিদাও হয়েছে ভিন্ন। এখন তাই তন্নতন্ন করে খুঁজেও বিশাল হারের দিনে মিলছে না আশার বাতি। পাকিস্তানের বিপক্ষে বিধ্বস্ত হয়ে বিশ্বকাপ থেকে প্রথম দল হিসেবে বিদায় নেওয়া বাংলাদেশ দলের আগাগোড়া পুরো গল্পই চরম ব্যর্থতা আর হতাশায় মোড়ানো।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরুর পর বিশ্বকাপে টানা ছয় ম্যাচ হেরে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। মঙ্গলবার ইডেন গার্ডেন্সে প্রতিপক্ষের কাছে পাত্তাই পায়নি সাকিব আল হাসানের দল।  আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের করা ২০৪ রানের পুঁজি তুড়ি মেরে উড়িয়ে পাকিস্তান জিতেছে ৭ উইকেটে। ম্যাচ শেষ করেছে ১০৫ বল আগে। এই হারের পর ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে গেল সাকিবদের।  

এবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ম্যাচে এক ইনিংস পরই ফল কি হতে যাচ্ছে তা আঁচ করা যাচ্ছিল। পাকিস্তানের বিপক্ষেও এই ধারার ব্যতিক্রম হয়নি। রানে ভরা উইকেটে কোন দল যদি স্রেফ ২০৪ রান করে তাহলে লড়াইয়ের আর বাস্তবতা থাকে না। সাদামাটা বোলিং আক্রমণ দিয়ে অসম্ভব কিছু করার কোন আভাসও দেয়া যায়নি কোন পর্যায়ে।

আরও একবার বাংলাদেশ মূলত ম্যাচ হেরেছে ব্যাটিংয়ে। জড়সড়ো অ্যাপ্রোচ, ভুল শট নির্বাচন আর সিদ্ধান্তহীনতা বাংলাদেশকে করে রেখেছে কোণঠাসা। ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। এদিন প্রথাগত ব্যাটিং অর্ডারই নামানো হয়।

টস জিতে ব্যাটিং বেছে শুরুটা হয়নি ভালো। ফের ব্যর্থ টপ অর্ডার। ২৩ রানেই পড়ে যায় তিন উইকেট। তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ভারতের  বিপক্ষে এক ফিফটি ছাড়া রাখতে পারেননি কোন ছাপ। শাহিন আফ্রিদির বল পা নড়াতে না পেরে এলবিডব্লিউ তিনি। নাজমুল হোসেন শান্ত টানা ছয় ম্যাচে ফেরেন দুই অঙ্কের আগে। বিশ্বকাপের আগে দুর্দান্ত ছন্দ দেখালেও বড় মঞ্চে একদম অচেনা তিনি। চারে মুশফিকুর রহিমকে নামিয়েও লাভ হয়নি এবার। হারিস রউফের গতিতে পরাস্ত ডানহাতি ব্যাটার।

বিশ্বকাপেই যার খেলা ছিল সংশয়ে, সেই মাহমুদউল্লাহ আরও এক ম্যাচে ছিলেন সাবলীল। দলের বিপর্যয়ে পরিস্থিতিতির দাবি মেটানো লিটন দাসকে নিয়ে দারুণ জুটি পেয়ে যান তিনি। লিটন খেলছিলেন নিয়ন্ত্রণ নিয়ে, মাহমুদউল্লাহ আলগা বল কাজে লাগিয়ে ছিলেন চনমনে। থিতু হয়ে দুজনেই দিচ্ছিলেন আশা।

চতুর্থ উইকেটে ৮৯ বলে ৭৯ রানের জুটির পর লিটন ফেরেন অদ্ভুতভাবে। ইফতেখার আহমেদের নীরিহ অফ স্পিন লেগ সাইডে ঠেলে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে উঠিয়ে দেন ক্যাচ। সফট হ্যান্ডে খেলে এমন বিপদ ডেকে আনায় নিজেই হয়ে যান স্তম্ভিত। ৪৫ রানের ইনিংসটা যেতে পারত তিন অঙ্কেও। কী সুযোগ হারালেন সেই কথা ভেবেই হয়ত মাঠ ছাড়ার সময় পা নড়ছিল না তার। 

লিটনের পর ৫৮ বলে ফিফটি করা মাহমুদউল্লাহ ফেরেন শহিনের ইয়র্কারে। তার আগে দারুণ খেলছিলেন তিনি। তবে টিকে থেকে দলকে টানার কাজটা তিনিও করতে পারেননি। অধিনায়ক সাকিব ক্রিজে এসে মনে হচ্ছিল এক রান নিতেও ভীষণ ধুঁকছিলেন। এক পর্যায়ে তার স্কোর ছিল ৩০ বলে ১১। সেই জড়তা কাটিয়ে থিতু হয়েও শর্ট বলে দেন আত্মাহুতি। দুই ম্যাচ একাদশে জায়গা হারিয়ে ফেরা তাওহিদ হৃদয়ের এবারও নিজের জায়গা প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেরেন বাজেভাবে।

বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের একঘেয়ে খতিয়ানের পর বোলিংয়ের বর্ণনা দিতে গেলেও আশার কিছু মিলবে না। ছোট পুঁজি নিয়ে পাক ওপেনারদের আলগা করতেও পারছিলেন না কেউ। আব্দুল্লাহ শফিক-ফখর জামান জুটি ভাঙে ১২৮ রানে গিয়ে। শফিক ৬৯ বলে ৬৮ করে মিরাজের শিকার হয়ে যখন ফিরছেন ম্যাচ নিয়ে নেই উত্তেজনা।

তিনে নামা অধিনায়ক বাবর আজমও মিরাজের বলে ক্যাচ দেন। আগ্রাসী মেজাজে থাকা ফখর মিরাজকে একাধিক ছক্কায় উড়িয়ে কাবু করে রেখেছিলেন। আরেকটি শটের চেষ্টায় তার বিদায় ৭৪ বলে ৮১ করে। ইফতেখার-রিজওয়ান মিলে বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন তড়িঘড়ি।

Comments

The Daily Star  | English

'Why should an innocent person be punished?' says Jahangir on Hamid's arrival

The home adviser says Hamid will face legal consequences only if an investigation finds him guilty

1h ago