বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র: ম্যাথু মিলার

ম্যাথু মিলার। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, তারা বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনাগুলো খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে এবং বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ।

গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আমেরিকা-ইউরোপ বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন। প্রথম প্রশ্ন হলো, যুক্তরাষ্ট্র কি অবগত যে ভারতের প্রভাবের কারণে, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি ভারতের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সমর্থনের কারণে, বাংলাদেশের জনগণের ভোটাধিকার, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অসম্ভব?

দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সংবাদ সম্মেলনে কিছু উত্তেজক ও অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন, যা ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত। বিশ্বের খুব কম মানুষই শেখ হাসিনার শারীরিক ভাষা ও ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ বোঝেন। তিনি একই কাজ করেছিলেন ২০১৮ সালে, যখন তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িতে হামলা হয়েছিল। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বসে একই ঠাট্টা-বিদ্রূপ করেছেন।

জবাবে মিলার বলেন, তারা স্পষ্ট করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য সরকারের কাছে যেমনটা আশা করে, বাংলাদেশ সরকারের কাছেও তেমনটা আশা করে। আর তা হচ্ছে—তারা কূটনীতিকদের সুরক্ষায় ভিয়েনা কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে। তিনি আগেও বলেছেন, আগের দিনও বলেছেন, আর তা হলো, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সব রাজনৈতিক দল, ভোটার, সরকার, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ সবার। বাংলাদেশের জনগণের চাওয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই। তা হলো, বাংলাদেশে যাতে শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়।

আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীদের সংলাপে বসার ব্যাপারে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আহ্বানের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সংলাপ করেন, তাহলে তিনি (শেখ হাসিনা) বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ করবেন। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো সংলাপে বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি ও তার প্রশাসন বিরোধীদের প্রতি খুবই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। গতকাল পুলিশের হাতে বিরোধীদলীয় দুই নেতা নিহত হয়েছেন। বিরোধীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ঢাকায় দুই শীর্ষ বিরোধী নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিদিনই তারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হতে পারে বলে কি আপনি মনে করেন?

জবাবে মিলার বলেন, প্রশ্নের প্রথম অংশ নিয়ে তার কোনো মন্তব্য নেই। এর পরিবর্তে তিনি যা বলবেন, তা হলো—অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তিনি আগে যে লক্ষ্যগুলোর কথা উল্লেখ করেছেন, তারা বিশ্বাস করেন, তা অর্জনের জন্য সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে তিনি (মিলার) বলেন, তারা বাংলাদেশের নির্বাচনী পরিবেশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা সহিংসতার ঘটনাগুলো খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছেন। তারা সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। এই সম্পৃক্ততা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে, শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে সবাই যাতে একত্রে কাজ করেন, সে জন্য তারা সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন, সম্পৃক্ত হচ্ছেন।

 

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

5h ago