চট্টগ্রাম

নিখোঁজ বিএনপি নেতার সন্ধানে ১২ বছর ধরে অপেক্ষায় পরিবার

চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা ও ফটিকছড়ি উপজেলার লেলাং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শহিদুল আলম সিরাজ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা ও ফটিকছড়ি উপজেলার লেলাং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এ এস এম শহিদুল আলম সিরাজের জন্য ১২ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন তার পরিবার।

তিনি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন এ তথ্যও নেই তাদের কাছে।

২০১২ সালের ৬ মার্চ বিএনপির 'ঢাকা চলো' কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার পর চট্টগ্রাম ফেরার পথে নিখোঁজ হন সিরাজ।

পরে পরিবারের সদস্যরা খুলশী থানায় ও পাঁচলাইশ থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।

কিন্তু, গত প্রায় ১২ বছরে পুলিশ তাকে খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয়েছে।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে গত এক যুগ ধরে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন সিরাজের স্ত্রী সোলতানা পারভিন ও তার দুই ছেলে।

নিখোঁজ ডায়রিতে সোলতানা উল্লেখ করেন, তার স্বামী বন্দরনগরীর পূর্ব নাসিরাবাদের আল ফালাহ হাউজিং সোসাইটির বাসা থেকে ২০১২ সালের ১ মার্চ ঢাকায় যান। এরপর ২০১২ সালের ৬ মার্চ রাতে সিরাজের সঙ্গে স্ত্রীর শেষ যোগাযোগ হয়। সে সময় তিনি চট্টগ্রাম ফিরছেন বলে জানিয়েছিলেন।

সোলতানা পারভিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার স্বামী ফটিকছড়ি উপজেলার একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন। অল্প বয়সেই তিনি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।'

তিনি আরও বলেন, '২০১২ সালের ৬ মার্চ রাতে তিনি আমাকে ফোন করে বলেছিলেন যে ফিরে আসছেন। এটা ছিল আমাদের শেষ কথোপকথন। সকালে তাকে ফোন দিলে তার বন্ধ পাওয়া যায়। দুই ছেলেকে নিয়ে আমি এখনো স্বামীকে খুঁজছি।'

'আমি জানি না সে বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে। যদি সে মারা যায় তবে দয়া করে লাশ হস্তান্তর করা হোক বা তার হদিস আমাদের বলা হোক,' বলেন সোলতানা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ফটিকছড়ি বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সারোয়ার আলমগীর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ক্ষমতাসীন দলের জোরপূর্বক গুমের শিকার যারা হয়েছেন তাদের মধ্যে সিরাজ অন্যতম। তিনি খুব জনপ্রিয় এবং ১৯৮৮ সালে খুব অল্প বয়সেই ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। অনেক প্রযুক্তিগত সহায়তা থাকা সত্ত্বেও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তার অবস্থান খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয়েছে যা আসলেই হতাশাজনক।'

সিরাজের ছোট ভাই ওয়াহিদুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ভাই বিএনপির পদধারী নেতা ছিলেন না, সক্রিয় সমর্থক ছিলেন। ঘটনার পর আমরা সম্ভাব্য সব উপায়ে তাকে খোঁজার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।'

'ডিবি অফিস, র‌্যাব অফিস ও গোয়েন্দা অফিসে গিয়ে তার হদিস চাই। কিন্তু খালি হাতে ফিরে আসতে হয়েছে আমাদের। তার কোনো রাজনৈতিক শত্রুতা ছিল না। আমরা এখনো জানি না তার সঙ্গে আদৌ কী হয়েছে,' যোগ করেন তিনি।

ওয়াহিদুল জানান, সিরাজের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। তার আচরণের কারণে ফটিকছড়ির মানুষ তাকে ভালোবাসতো।

তিনি বলেন, 'আমাদের তদন্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তার সর্বশেষ অবস্থান খুঁজে পেয়েছিলাম।'

যোগাযোগ করা হলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পরিবারের সদস্যরা ২০১২ সালে আমার থানায় জিডি করেন। ঘটনার সময় তার বাসা খুলশী থানার অধীনে ছিল তাই তারা খুলশী থানায় আরেকটি জিডি করেন। পুলিশ তাকে খোঁজার চেষ্টা করেছে। আমরা খুলশী থানায় কথা বলে জানতে পারি তিনি এখনো নিখোঁজ।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh trade deficit July-August FY25

Trade deficit narrows 2.6% in July-April

The country’s trade deficit narrowed by 2.60 percent in the first ten months of the current fiscal year compared to the same period a year ago, thanks to a rise in export earnings coupled with subdued imports..During the July-April period of fiscal year (FY) 2024-25, the trade gap was $18.

6h ago