নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয় ১ মাস ধরে তালাবদ্ধ, পুলিশের কড়া পাহারা
নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয় গত এক মাস ধরে পরিত্যক্ত, তালাবদ্ধ ও কঠোর নজরদারিতে রয়েছে।
গ্রেপ্তার আতঙ্কে দলের নেতাকর্মীদের বেশিরভাগই নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয় এড়িয়ে চলেন এবং দলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন তাদের সেখানে দেখা গেলেই আটক করা হচ্ছে।
এক মাস আগেও সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সেখানে হাজার হাজার বিএনপি নেতা-কর্মীকে সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা গেছে।
২৮ অক্টোবর দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পরে প্রাণবন্ত এই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। পুলিশের সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ১ ঘণ্টা ৩৮ মিনিটের মধ্যে সমাবেশটি ভেস্তে যায়।
এখন দুই ভাগে পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক এই কার্যালয় পাহারা দেন।
এদিকে বিএনপি 'অজ্ঞাত স্থান' থেকে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলন করছে এবং দলীয় নেতারা অভিযোগ করেছেন যে পুলিশ তাদের কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে।
গতকাল বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলাপসিবল গেট দিয়ে হাতে গোনা কয়েকটি বাংলা সংবাদপত্র দেওয়া এবং একটি চেয়ার রয়েছে সেখানে। সামনের ডেস্ক ও চারপাশ ধুলোর পুরু স্তরে ঢেকে গেছে। দলটির ডাকা দেশব্যাপী অবরোধ চললেও আশেপাশে কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি।
এসময়ে মহিউদ্দিন আহমেদ নামে এক ব্যক্তিকে বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা যায়, তিনি তার ভাইকে খুঁজছেন, যিনি একজন বিএনপি কর্মী। ৫০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি দাবি করেন, পুলিশ গতকাল পর্যন্ত এক মাস তাকে পার্টির গেটের কাছে আসতে দেয়নি।
তিনি বলেন, 'আজকে (গতকাল) কেউ আমাকে মূল ফটকের বাইরে দাঁড়াতে বাধা দেয়নি।'
পাশের গ্যারেজের মালিক আনিস মিয়া (৫০) জানান, তিনি পাঁচ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছেন।
'২৮ অক্টোবরের আগে দলের কর্মীরা মধ্যরাত পর্যন্ত সেখানে ভিড় করত। এখন একজন মানুষও গেইটের সামনে দাঁড়াতে পারে না।'
সাত বছর ধরে অফিসের পাশে চায়ের দোকান করা নুরুল আমিন বলেন, 'আমার দৈনিক বিক্রি ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। বিএনপি যখন অনুষ্ঠান করছিল, তখন তা ১০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের পর তা কমে দাঁড়ায় এক হাজার টাকা বা তার একটু বেশি।'
বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশ পাহারা নিয়ে জানতে চাইলে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপি-আওয়ামী লীগ প্রত্যেকটা পার্টি অফিসের সামনে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ ফোর্স থাকে। সবসময়ই এখানে আলাদাভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যেহেতু এটা বড় রাজনৈতিক দল, অনেক ধরনের সিচুয়েশন হয় সেজন্য সবসময় নিরাপত্তা থাকে। এটা প্রচলিত। দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে চলে আসছে।'
বিএনপি অফিসে তালার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'তালা আমরা মারিনি। তালা আমাদের না। আর তালা সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। ওদের নিজস্ব কর্মচারীরা তালা মারে।'
Comments