নির্বাচনী ইশতেহারে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে অঙ্গীকার ঘোষণার দাবি

‘এবারের জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহারে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়ন ইস্যু অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। দায়িত্বগ্রহণের পর নির্বাচিতরা ইশতেহার বাস্তবায়ন করবেন। আমরা এই বাস্তবায়নে সহযোগী হবো।’
স্মারকলিপি পেশ করছেন ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপের প্রতিনিধিরা। ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার তুলে ধরার জোর দাবি জানিয়েছে ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপ।

গত ২০ ও ২১ ডিসেম্বর সুন্দরবন এবং সোনাইলতলা ইউনিয়নে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদারের কাছে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় টেকসই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য মোংলার জনসাধারণের পক্ষ থেকে ছয়টি দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করেন ৫৪টি ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপের প্রতিনিধিরা।

ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মোংলা উপজেলাসহ উপকূলীয় অঞ্চলের জনগণ এক মহাসংকটের মুখে দাঁড়িয়ে। নিরাপদ খাবার পানির তীব্র সংকট, লবণাক্ততা, ফসলহানি, ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ইত্যাদি কারণে এ এলাকার জনগণ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। অপ্রতুল বাজেট বরাদ্দ, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এবং তথ্য ও প্রযুক্তির অভাব এ ধরনের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

এমন পরিস্থিতে ক্রমবর্ধমান এ সংকট কাটিয়ে উঠতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে অতি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্তির জন্য জোর দাবি জানিয়েছে তারা।

দাবিগুলোর মধ্যে আছে—সুপেয় পানির নিশ্চয়তা, উপকূলবাসীর জন্য জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ, অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য নিরাপত্তা ও জলবায়ুসহিষ্ণু কৃষি প্রযুক্তির প্রসার, দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং পরিবেশ সংরক্ষণে যথাযথ নীতিমালা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন।

ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপের নেত্রী কমলা সরকার ও সুস্মিতা মণ্ডল বলেন, 'এবারের জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহারে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়ন ইস্যু অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। দায়িত্বগ্রহণের পর নির্বাচিতরা ইশতেহার বাস্তবায়ন করবেন। আমরা এই বাস্তবায়নে সহযোগী হবো।'

দাবি পেশ করার সময় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা সেগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন।

তারাও বলেন, এই দাবিগুলো উপকূলীয় এলাকার মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যৌক্তিক দাবি এবং ভোটে জয়ী হলে তারা এই দাবি পূরণের চেষ্টা করবেন।

ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপ মোংলা উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি, সুপেয় পানির নিশ্চয়তাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ২০২২ সাল থেকে কাজ করছে।

মোংলার ছয়টি ইউনিয়নের ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ৫৪টি ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপ আছে। প্রতিটি গ্রুপে ২৫-২৮ জন সদস্য রয়েছেন, যাদের ৫০ শতাংশই নারী।

Comments