পাবনা-৩

আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরোধে উত্তেজনা বাড়ছে

দলের দুই শীর্ষ নেতার নির্বাচনী লড়াইয়ে পাবনা-৩ আসনের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
মো. মকবুল হোসেন (বামে) ও আব্দুল হামিদ।

নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে পাবনা-৩ আসনে (চাটমোহর, ভাঙ্গুরা, ফরিদপুর) উত্তেজনা ততই বাড়ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী গত তিন বারের সংসদ সদস্য মো. মকবুল হোসেনের বিরুদ্ধে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একই দলের চাটমোহর উপজেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করা উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

দলের দুই শীর্ষ নেতার নির্বাচনী লড়াইয়ে পাবনা-৩ আসনের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে হুমকি-ধামকিসহ নানা অভিযোগ উঠলেও এবার নির্বাচনী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ হামলা-পাল্টা হামলার অভিযোগ উঠেছে।

গত শুক্রবার রাতে এবং শনিবার দুপুরে দুই দফা চাটমোহর রেলবাজার এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দুটি পাল্টাপালটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার রাতে একদল কর্মী সমর্থক রেলবাজার এলাকায় মিছিল করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টারের ট্রাক প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। এ নিয়ে ট্রাক প্রতিকের সমর্থকদের সাথে তাদের কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়।

শনিবার দুপুরে নৌকার সমর্থকরা রেলবাজার এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনী অফিসেও ভাঙচুর করে বলে জানা গেছে।

খবর পেয়ে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি ঘতনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, শনিবার উভয়পক্ষ পৃথক দুটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, 'প্রচারণার শুরু থেকেই নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা একের পর এক হুমকি ধামকি দিয়ে চলেছে। এখন শুরু করেছে ভাঙচুর। ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।'

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মকবুল হোসেন বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন তার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে বলে তিনি শুনেছেন।'

কর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে সংসদ সদস্য মো. মকবুল হোসেন বলেন, দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। দলের নেতা কর্মীরা প্রায় সবই নৌকার পক্ষেই রয়েছে।

নৌকার প্রার্থী মো. মকবুল হোসেন শনিবার বিকেলে পাবনার চাটমোহর সরকারী কলেজ মাঠে তিন উপজেলার আওয়ামীলী গের নেতাকর্মীদের নিয়ে এক সভার আয়জন করে। সেখানে তিনি তার অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য জীবনের শেষ নির্বাচনে ভোট প্রার্থনা করেন।

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে পাবনা-৩ আসনের চাটমোহর, ভাঙ্গুরা ও ফরিদপুরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অনেকেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভাগ হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে পাল্টাপাল্টি উত্তেজনামূলক বক্তব্যের অভিযোগও পাওয়া গেছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে, চাটমোহর সার্কেলের এএসপি হাবিবুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা সবাই একই দলের। সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিটি এলাকায় কঠোর নজরদারি করছে জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, প্রয়োজন হলে আইনের প্রয়োগ করা হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে বলে জানান তিনি।

Comments