নিউজিল্যান্ডের মাঠে টি-টোয়েন্টিতেও প্রথম জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড
অপরাজিত ৪২ রানের পথে লিটন

দারুণ বোলিংয়ে কাজটা সেরে রেখেছিলেন শরিফুল ইসলাম-মোস্তাফিজুর রহমান-শেখ মেহেদী হাসানরা। তবে ছোট লক্ষ্য তাড়ায় একটা পর্যায়ে গিয়ে জমেছিলো  শঙ্কার মেঘ। শেষ পর্যন্ত লিটন দাসের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে কোন বিপদ হয়নি, নিউজিল্যান্ডের মাঠে টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশ পেয়েছে ঐতিহাসিক জয়।

বুধবার নেপিয়ারে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে স্বাগতিকদের ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। কিউইদের করা ১৩৪ রান ৮ বল আগেই টপকে যায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ৩৬ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থেকে রান তাড়ায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন লিটন। ২৫ বলে ৪০ রানের জুটিতে তাকে সঙ্গ দিয়ে ১৬ বলে ১৯ করেন বোলিংয়ে ২ উইকেট নেওয়া শেখ মেহেদী। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ম্যাচ সেরাও তিনি। 

নিউজিল্যান্ডের মাঠে এবারই প্রথম ওয়ানডে জিতেছিল বাংলাদেশ। এই সফরের আগে সাদা বলে ২৭ ম্যাচ খেলে জয়শূন্য ছিলো লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও কাটল জয় খরা। ৯ টি-টোয়েন্টি হারের পর অবশেষে এলো জয়।  এই জয়ের মাহাত্ম আরেকটু বেশি। কারণ তিন ম্যাচ সিরিজেও এগিয়ে যেতে পারল বাংলাদেশ। এই জয়ের মধ্য দিয়ে একটি চক্র পূরণও হয়ে গেলো। নিউজিল্যান্ডে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি তিন সংস্করণেই এখন জয় আছে বাংলাদেশের। 

১৩৫ রান তাড়ায় ইতিবাচক শুরুর আভাস দেন রনি তালুকদার। টিম সাউদিকে ছক্কায় উড়িয়ে শুরু তার। তবে অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে ইনিংস টানতে পারেননি। অ্যাডাম মিলনের বলে আরেক ছক্কা মারতে গিয়ে তুলে দেন সহজ ক্যাচ। 

অধিনায়ক শান্ত নেমেই পুল করে পান বাউন্ডারি। তার ব্যাট থেকে বাউন্ডারি আসে আরও তিনটি। উড়তে থাকা শান্ত আচমকায় ধসে পড়েন। জিমি নিশামের শর্ট বলে অনায়াসে বাউন্ডারি পাওয়া যেত। শান্ত টাইমিংয়ে গড়বড় করে তুলে দেন সহজ ক্যাচ। ১৪ বলে ১৯ করে তিনি ফিরতে ৩৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। 

চারে নেমে ইশ সোধিকে সুইপে ছক্কা, রিভার্স সুইপে চারে শুরু করেন সৌম্য সরকার। খেলছিলেন পরিস্থিতি বুঝে। বেন সিয়ার্সের বলে ফ্লিকে দারুণ চার মারার পর পরের বলেও একই চেষ্টায় যান। গতিময় দারুণ ডেলিভারিটি ভেঙে দেয় তার স্টাম্প। লিটনের সঙ্গে ভাঙে ২২ বলে ২৯ রানের জুটি। 

তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে এরপর আরেক জুটি পান লিটন। হৃদয় ছিলেন তুলনামূলক আগ্রাসী। সিয়ার্সকে ছক্কায় উড়িয়ে শুরু করা তরুণ ব্যাটার ছিলেন সাবলীল। তাড়াহুড়ো না করে এগুচ্ছিল বাংলাদেশ। বলে রানের চাহিদায় বলে-রানেই স্কোরবোর্ড সচল রাখছিলেন দুজন। ২৯ বলে ২৯ তুলা এই জুটি ভাঙেন স্যান্টনার। কিউই অধিনায়কের বলে খানিকটা এগিয়ে পুশ করতে গিয়ে কাভারে ধরা দেন ১৮ বলে ১৯ করা হৃদয়। 

ছয়ে নেমে আফিফ হোসেন ব্যর্থ। কয়েকটি ডট বল খেলে চাপ নিতে পারলেন না। ৬ বলে ১ রান করে টিম সাউদির শর্ট বলে তালগোল পাকানো শট খেলে তুলে দেন ক্যাচ। 

এরপর শেখ মেহেদীকে নিয়ে জুটি পান লিটন। একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে বাংলাদেশকে টানেন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটার। ২৫ বলে ৪০ রানে অবিচ্ছিন্ন জুটি শেষ পর্যন্ত ম্যাচ শেষ করে দেয়। 

এর আগে টস জিতে বোলিং নিয়ে দলের দারুণ শুরুর নায়ক মেহেদী। প্রথম ওভারেই উইকেট এনে দেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে জোড়া শিকার ধরেন শরিফুল। ১ রানেই নিউজিল্যান্ডের টপ তিন ব্যাটারকে তুলে নেয় বাংলাদেশ। 

২০ রানে ৪ আর ৫০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা কিউই ইনিংস টেনেছেন জিমি নিশাম। অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারকে নিয়ে ৩১ বলে ৪১ রানের জুটিতে দলকে লড়াইয়ের জায়গায় রাখেন তিনি। ২৯ বলে ৪৮ করে ১৭তম ওভারে তিনি আউট হতে দেড়শো পেরুনোর আশা মিইয়ে যায় স্বাগতিকদের। 

উইকেট কিছুটা ট্রিকি হলেও এই রান যে যথেষ্ট নয় সেটা টের পেতে বেশি দেরি হয়নি নিউজিল্যান্ডের। 
 

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

7h ago