লালমনিরহাট-২

সমাজকল্যাণমন্ত্রীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ ‘ভুয়া’, দাবি ছোট ভাইয়ের

সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের মুক্তিযোদ্ধার সনদ 'ভুয়া' বলে দাবি করেছেন তারই আপন ছোট ভাই মাহবুবুজ্জামান আহমেদ।

গতকাল বুধবার রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা এলাকায় এক নির্বাচনী সভায় এই দাবি করেন তিনি।

মাহবুবুজ্জামান আহমেদ কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

তিনি লালমনিরহাট-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি সিরাজুল হকের পক্ষে ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

গতকালের নির্বাচনী সভায় মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, '১৯৯৬ সালের আগে আমরা কোনো দিনই সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জানতাম না। ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পোস্টারে তিনি হঠাৎ করেই মুক্তিযোদ্ধা লেখেন। এ সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মন্ত্রীর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলেন। ওই সময় মন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি সব কাগজপত্র বানিয়ে নিয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমার ভাই নুরুজ্জামান আহমেদের বয়স ২২-২৩ বছর ছিল। আমাদের পারিবারিক পাটের ব্যবসা দেখাশুনা করতেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাট কেনার জন্য তিনি ভারতের কোচবিহারের সিতাই এলাকায় অবস্থান করেছিলেন।'

'সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ মুক্তিযোদ্ধার ট্রেনিং নেননি' উল্লেখ করে মাহবুবুজ্জামান আহমেদ দাবি করেন, 'তিনি কোনো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। তার মুক্তিযোদ্ধা সনদটি ভুয়া।'

কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মর্তুজা হানিফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নন। তার মুক্তিযোদ্ধার সনদ ভুয়া। নুরুজ্জামান আহমেদ কোথায় ট্রেনিং নিয়েছেন, কোথায় যুদ্ধ করেছেন এবং কারা তার সহযোদ্ধা ছিলেন—এসবের কোনো কিছুই তিনি বলতে পারবেন না।'

তিনি আরও বলেন, 'কালীগঞ্জ উপজেলার সব মুক্তিযোদ্ধা বিষয়টি জানেন। কিন্তু ক্ষমতার দাপট থাকায় কেউই সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পান না।'

এই অভিযোগের বিষয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, 'আমি মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং নিয়েছি কি না, আমি যুদ্ধ করেছি কি না, আর আমার সহযোদ্ধা আছে কি না, সেটা আমি জানি। ওরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। সময় আসলে ওদের মিথ্যাচারের সঠিক জবাব দেওয়া হবে।'

লালমনিরহাট-২ আসনে নুরুজ্জামান আহমেদ নৌকা প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল হক ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ ছাড়া, এ আসন থেকে জাকের পার্টির রজব আলী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মমতাজ আলী শান্ত, জাতীয় পার্টির দেলোয়ার হোসেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শরিফুল ইসলাম ও  বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির দেলাব্বর হোসেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Cops get whole set of new uniforms

The rules were published through a gazette yesterday, repealing the previous dress code of 2004

1h ago