জনগণের ভোটে নয়, কারচুপির ভোটে পরাজিত হয়েছি: ইনু

জনগণের ভোটে নয়, কারচুপির ভোটে পরাজিত হয়েছি: ইনু
হাসানুল হক ইনু | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া ২ আসনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, তিনি জনগণের ভোটে নয়, কারচুপির ভোটে পরাজিত হয়েছেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের দুএকজন নেতা সরাসরি নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন।

আজ মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার মিরপুর এলাকায় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ইনু বলেন, 'বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত, সাংঘর্ষিক কারচুপির ঘটনা ছাড়া সারা দেশে ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে—এই মতের সঙ্গে আমি একমত। দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত যে কারচুপি এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, তার ভেতরে দুর্ভাগ্যজনক হলেও কুষ্টিয়া ২ আসন; আমার এলাকা অন্তর্ভুক্ত।

'এখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মাস্তান বাহিনী ভোটের সাত দিন আগে থেকে যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সেটা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি এবং ভোটের দিন ১৬১ কেন্দ্রের ভেতরে ১৮টি কেন্দ্রে অস্বাভাবিক ভোট প্রদান লক্ষ করা গেছে—যা কারচুপির মাধ্যমে করা হয়েছে। উপর্যপুরি প্রতিবার করার পরেও, কর্তৃপক্ষের নজরে আনার পরেও কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে,' বলেন তিনি।

চৌদ্দ দলীয় জোট থেকে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা এই নেতা বলেন, 'আমি মনে করি, কুষ্টিয়া ২ আসনে আমি জনগণের ভোটে নয়, কারচুপির ভোটে পরাজিত হয়েছি। আশা করি, এটা সবাই তদন্ত করে দেখবেন এবং এটার প্রতিকার ও বিহিত করবেন।'

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নির্বাচনী ঘটনা নিয়ে জোটে রাজনৈতিক কোনো প্রভাব পড়বে না। জোটের রাজনৈতিক বিষয়ে আমরা ঐক্যমত্যে আছি। জোটের শরিকদের ভেতরে নির্বাচনী সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে যে বিভ্রান্তি-বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে সেটা অবশ্যই নিষ্পত্তি করতে হবে। একইসঙ্গে জোটের প্রার্থীর এলাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুণ্ডা বাহিনীর যে আক্রমণ-হুমকি-ধামকি-অত্যাচার শুরু হয়েছে, এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তা না হলে জোটের অভ্যন্তরে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে না।'

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা ঢাকায় যাই, জোটের বৈঠক হবে এবং জোটের প্রার্থী এলাকাতে; যেহেতু আমরা জোটের শরিক, এখানে আওয়ামী লীগ বনাম জোটের শরিক দলের সাংঘর্ষিক অবস্থা থাকা উচিত না। এটা নিষ্পত্তি হওয়া উচিত, বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আশা করি এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।'

জাসদ সভাপতি বলেন, 'জোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রে এবং সর্বক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব জোটের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছে; নৌকার বিরুদ্ধে—এটা আমরা নজরে আনব। এটা তাদের দলীয় বিশৃঙ্খলা, এটা সমাধান করার আহ্বান জানাব।'

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমার আসনে আমি সরাসরি বলতে চাই, আওয়ামী লীগ বেশিরভাগ নেতৃত্ব এখানে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করেছে। এখানে কেন্দ্রের দুএকজন নেতা সরাসরি জড়িত এই মর্মে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে।'

প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪৪৫ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন ট্রাক প্রতীক নিয়ে এক লাখ ১৫ হাজার ৭৯৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

'Don't merge SIBL'

Shareholders urge BB, ministry in separate letters

2h ago