৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভায় প্রায় অর্ধেকই ব্যবসায়ী

৩৭ সদস্যের মন্ত্রিসভায় প্রায় অর্ধেকই ব্যবসায়ী
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, নতুন মন্ত্রিসভাতেও ব্যবসায়ীদের আধিক্য অব্যাহত রয়েছে। কারণ এর প্রায় অর্ধেক সদস্যই পেশা হিসেবে ব্যবসাকে উল্লেখ করেছেন।

নতুন মন্ত্রিসভার ৩৭ সদস্যের মধ্যে ১৬ জনই ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে সাতজন কৃষিকাজকে তাদের অন্যতম আয়ের উৎস হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

অন্য পাঁচজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী আইনজীবী এবং দুইজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী কৃষক।

আগের মন্ত্রিসভায় ৪৮ সদস্যের মধ্যে ২২ জন ব্যবসায়ী ছিলেন এবং ২০১৪ সালে গঠিত মন্ত্রিসভায় ৫৭ জনের মধ্যে ২১ জন ব্যবসায়ী ছিলেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মন্ত্রিসভায় ব্যবসায়িক আধিপত্যের প্রভাব তাদের প্রকৃত সংখ্যার চেয়েও অনেক বেশি। এটি তাদের ব্যক্তিগত ও সম্মিলিত ব্যবসায়িক স্বার্থ, যার পেছনে আছে সংসদের ৬৫ শতাংশ সদস্য।'

তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের অনুপস্থিতিতে একচেটিয়া রাজনৈতিক ও শাসন ব্যবস্থায় তাদের বিপুল সুবিধা, বিশেষ করে যেখানে রাষ্ট্রীয় জবাবদিহিতার প্রতিষ্ঠানগুলো গভীরভাবে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে এবং প্রায় অকার্যকর, সেখানে বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের চেয়ে ব্যবসায়িক স্বার্থদ্বারা পরিচালিত হওয়ার সুস্পষ্ট ঝুঁকি আছে।

নতুন মন্ত্রিসভার যেসব সদস্যরা তাদের পেশা হিসেবে ব্যবসাকে উল্লেখ করেছেন, তারা হলেন—স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান, পরিকল্পনামন্ত্রী মো. আবদুস সালাম, প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান।

ব্যবসার পাশাপাশি কৃষিকাজের কথা উল্লেখ করেছেন কৃষিমন্ত্রী আবদুস শহীদ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী উবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী কৃষিকাজকে তাদের একমাত্র পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

আইন পেশার কথা উল্লেখ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

মন্ত্রিসভার অন্তত তিনজন সদস্য সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা। সেখানে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক, সাবেক আমলা, শিক্ষক ও একজন কূটনীতিক রয়েছেন।

মন্ত্রিসভায় ঢাকা বিভাগের ১৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের নয়জন, সিলেট বিভাগের তিনজন এবং বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ থেকে দুইজন করে সদস্য রয়েছেন।

মন্ত্রিসভার আকার বাড়বে কি না, জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত। আমি মনে করি কিছু সদস্য যোগ করা হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

22 out of 35 parties want caretaker govt system

As per proposals sent to constitution reform commission

10h ago