আন্তর্জাতিক ৬ সংগঠনের বিবৃতি ‘পক্ষপাতদুষ্ট’: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির নির্বাচন 'আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না' বলে ছয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থার দেওয়া বিবৃতিকে 'পক্ষপাতদুষ্ট ও অযৌক্তিক' আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত ১২ জানুয়ারি, ছয়টি সংস্থা – এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন, ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স ফর সিটিজেন পার্টিসিপেশন, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, এশিয়ান ডেমোক্রেসি নেটওয়ার্ক, ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট (অস্ট্রেলিয়া), এবং অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক এক বিবৃতিতে এই কথা বলেছিল।

বিবৃতিতে সংস্থাগুলো বলে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন 'প্রকৃত' বা 'প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক' ছিল না। গণতান্ত্রিক রীতিনীতি এবং নির্বাচনের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসৃত না হওয়ার ব্যাপারেও গুরুতর প্রশ্ন রেখেছিল এই সংস্থাগুলো।

এর প্রতিক্রিয়ায় আজ শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বিবৃতিতে উত্থাপিত অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, 'অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বিভিন্ন দেশ ভূয়সী প্রশংসা করেছে এবং নতুন সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, নতুন নির্বাচনের আহ্বান অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য।'

'বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, উৎসবমুখর পরিবেশে এবং জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মোট ১,৫৩৪ জন প্রার্থী এবং ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এ নির্বাচনে কোনো কোনো জায়গায় বিশেষকরে গ্রামীণ এলাকায় ভোট প্রদানের হার ৭০ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি ছিল। তবে, শহর এলাকায় তুলনামূলকভাবে কম ভোটার উপস্থিতির কারণে সারাদেশে গড় ভোটের হার ছিল ৪১.৮ অর্থাৎ প্রায় ৪২ শতাংশ,' বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, 'স্বাধীন নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করেছে। নির্বাচনের আগে বিএনপির সহিংসতা এবং নির্বাচন বানচাল করার হুমকি সত্ত্বেও, হাতে গোনা কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোটের দিনটি ছিল শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবমুখর। আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং সাংবাদিক, যারা সক্রিয়ভাবে মাঠ থেকে নির্বাচনের প্রতিবেদন করেছেন, তারা তাদের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ার এর সত্যতা প্রকাশ করেছেন।'

রাজনৈতিক কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি দাবি করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনকে সামনে রেখে সংযম এবং আইনি সীমানা মেনে সহিংসতার ঘটনাগুলোর মোকাবেলা করেছেন। রাজনৈতিক কারণে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। নির্বাচন বানচালের জন্য যারা মানুষ ও যানবাহনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে, আগুন দিয়েছে, মানুষকে হত্যা ও আহত করেছে এবং জনজীবন ব্যাহত করেছে তাদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে এবং সকল নাগরিকের অধিকার রক্ষার জন্য এই পদক্ষেপগুলো প্রয়োজনীয় ছিল।'

'তাই এই যৌথ বিবৃতি বিভ্রান্তিকর, একতরফা এবং অগ্রহণযোগ্য। গণতন্ত্রবিরোধী ও নির্বাচনবিরোধী শক্তি যারা নির্বাচনকে বানচাল করার অপচেষ্টা করেছিল তাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য এটি বিবৃতি উদ্দেশ্যমূলকভাবে জারি করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান,' বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

Comments

The Daily Star  | English
road accidents death in Bangladesh April

Road accidents killed 583 in April: Jatri Kalyan Samity

Bangladesh Jatri Kalyan Samity (BJKS), a passenger welfare platform, said that a total of 583 people were killed and 1,202 injured in 567 road accidents across the country in the month of April, citing media reports

4h ago