সম্ভব হলে প্রতিটি জেলায় ‘১৯৭১ সেইসব দিন’ দেখাতাম: হৃদি হক

'যখন সিনেমা বানাব, তখনই সিদ্বান্ত নিই, যে বিষয় নিয়ে বানাব তা যেন অর্থবহ  হয়। এজন্যই  আমরা মুক্তিযুদ্ধের গল্পকে বেছে নিই।’

হৃদি হক পরিচালিত প্রথম সিনেমা '১৯৭১ সেইসব দিন'। গতবছর মুক্তির পর সিনেমাটি বেশ প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়া আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার দর্শকরাও আগ্রহ নিয়ে সিনেমাটি দেখেছেন।

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরো মার্চ মাসজুড়ে '১৯৭১ সেইসব দিন' সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় প্রদর্শিত হবে।

হৃদি হক বলেন, 'সম্ভব হলে প্রতিটি জেলায় "১৯৭১ সেইসব দিন" সিনেমাটি দেখাতাম। তারপরও চেষ্টা করছি দেশের মানুষকে এটি দেখাতে। সময় লাগলেও কাজটি করব।'

তিনি বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া আমরা বাঙালীরা কেউ-ই না। মুক্তিযুদ্ধ মানেই বাংলাদেশ এবং আমরা। যখন সিনেমা বানাব, তখনই সিদ্বান্ত নিই, যে বিষয় নিয়ে বানাব তা যেন অর্থবহ  হয়। এজন্যই  আমরা মুক্তিযুদ্ধের গল্পকে বেছে নিই।'

হৃদি হক আরও বলেন, '৭১ এর ভাবনা দিয়ে শুরু করাটা বড় বিষয়  ছিল। সেটুকু করতে পেরেছি।'

সারাদেশে সিনেমাটি প্রদর্শনের বিষয়ে জানতে চাইলে হৃদি হক বলেন, 'সিনেমাটি যখন মুক্তি পেল তখনই সারাদেশ থেকে দর্শকরা এটি দেখার আগ্রহ জানান। তারা আমাদের জিজ্ঞেস করতেন, "আমাদের এখানে কবে দেখতে পারব?" আমার কাছে যেমন করেছেন, একইভাবে টিমের কাছেও অনুরোধ করেছেন। সেই ভাবনা থেকে কাজটি করা। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে নতুন প্রজন্মও সিনেমাটির মধ্যে দিয়ে জানতে পারবেন।'

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সিনেমা বানানোর অনুভূতির বিষয়ে হৃদি হক বলেন, 'এই ফিলিংসটা বলে বোঝানো যাবে না। অন্যরকম অনুভূতি। খুবই সুখের অনুভূতি। খুবই ভালোলাগার অনুভূতি।'

এক প্রশ্নের জবাবে হৃদি হক বলেন, 'বাংলাদেশের সিনিয়র অভিনয়শিল্পীরা '১৯৭১ সেইসব দিন' সিনেমাটি দেখেছেন। তারা তো আমাদের সংস্কৃতির জন্য, দেশের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের জন্য অনেক করেছেন। তারা যখন নিজেরা হলে গিয়ে এটি দেখেছেন, তখন কি যে আত্নতৃপ্তি পেয়েছি  তা ভাষায়  প্রকাশ করবার নয়! আমি অভিভূত। একজীবনের বড় অনুভূতি আমার জন্য।'

'১৯৭১ সেইসব দিন' ঢাকায় মুক্তির পর আমেরিকার বেশ কয়েকটি রাজ্যে এবং অস্ট্রেলিয়ায় মুক্তি পেয়েছিল। হৃদি হক আমেরিকায় গিয়েছিলেন মুক্তির সময়ে। তিনি বলেন, 'আমি নিউইয়র্ক পৌঁছাবার আগেই সিনেমাটি দেখেছিলেন একাত্তরের শহীদ বুদ্বিজীবী ড. ফজলে রাব্বীর মেয়ে। তিনি খুব  প্রশংসা করেছিলেন। তার কথাগুলো  আমাকে ছুঁয়ে গেছে। আমি আবেগপ্রবণ হয়ে গেছি। এইসব প্রাপ্তির  সাথে কোনো কিছুর তুলনা হয় না।

তিনি আরও বলেন, 'নিউইয়র্কে টানা তিন সপ্তাহ চলেছে সিনেমাটি। অনেক শো হাউজফুল গেছে। আমি যাবার পরও এটা দেখেছি। প্রত্যেকটা রাজ্যে দর্শকরা  দেখেছেন। ঢাকার মতোই অনুভূতি হয়েছে আমার। দর্শকদের কাছ থেকে যেরকম অনুভূতি পেয়েছি তা সত্যিই মনে রাখার  মতো।'

নিউজার্সির একটি ঘটনা উল্লেখ করে হৃদি হক বলেন, 'নিউজার্সির মেয়র  পুরো টিমসহ  "১৯৭১ সেইসব দিন" সিনেমাটি দেখেছেন। তারা আমার টিমের সবাইকে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। এটাও একটা প্রাপ্তি।'

অন্যদিকে, আমেরিকার আরেকটি ঘটনা মনে করে তিনি বলেন, 'ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় আমি একটি  লেকচার দিয়েছিলাম সিনেমা সম্পর্কে। বাংলাদেশের একজন পরিচালক হয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলাম। বিশ্বের ভালো ভালো পরিচালকরা সেখানে সেমিনারে গিয়ে লেকচার দেন। এটাও আমার কাছে ভালোলাগার বিষয়।'

সবশেষে তিনি বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের সিনেমার প্রতি মানুষের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। এটি খুব ভালোলাগার বিষয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

2h ago