ওষুধ শিল্পপার্কে উৎপাদন এপ্রিলে শুরু

ওষুধ শিল্পপার্ক
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ওষুধ শিল্পপার্ক। ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ওষুধ শিল্পপার্কে অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই) উৎপাদন আগামী এপ্রিলে শুরু হবে। গ্যাস সংযোগ না পেয়েও একমি ল্যাবরেটরিজ তাদের কারখানা চালু করতে যাচ্ছে।

একমি ল্যাবরেটরিজের পরিচালক শেখ মাকসুদুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের কারখানা উৎপাদনের জন্য প্রায় প্রস্তুত।'

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ২০০ একর জমিতে শিল্পপার্কটি নির্মাণ করে ২১ ওষুধ কারখানার জন্য ৪২ প্লট বরাদ্দ দিয়েছে।

এখন পর্যন্ত এসিএমই ল্যাবরেটরিজ, হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস ও ইউনিমেড-ইউনিহেলথ ফাইন কেমিক্যালস প্রতিষ্ঠান কারখানা করেছে।

বর্তমানে, ওষুধের কাঁচামালের প্রায় ৮৫ শতাংশ আমদানি করতে হয়। এই খাতে প্রতি বছর প্রায় এক দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার খরচ হয়।

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালসসহ অন্তত ছয় প্রতিষ্ঠান বছরে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের কাঁচামাল উৎপাদন করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি আরও বড় প্রতিষ্ঠান এ শিল্পে বিনিয়োগ করে তাহলে ওষুধের অন্তত ৫০ শতাংশ কাঁচামাল দেশে উৎপাদন সম্ভব।

এর অর্থ বাকি ৫০ শতাংশ এখনো আমদানি করতে হবে। এখন দেশে শুধু অজৈবিক ছোট মলিকিউল এপিআই উত্পাদন হয়। বর্তমানে এর বাজার প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা।

একমির শেখ মাকসুদুর রহমান বলেন, 'ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে আমাদের কারখানা দুইবার ঘুরে গেছেন।'

তিনি জানান, বিশ্বমানের এপিআই উৎপাদন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান ও ভারত থেকে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আনায় এ কারখানায় বিনিয়োগ প্রায় ৫০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

তার মতে, এই কারখানায় প্রতি বছর ৬০০ কোটি টাকার এপিআই উত্পাদন সম্ভব হবে।

স্থানীয় ২৬৫ ওষুধ কারখানার সংগঠন বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এস এম শফিউজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্যাস সংযোগ পেতে অনেক দেরি হওয়ায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান এপিআই পার্কে কারখানা করেনি।'

তিনি আরও বলেন, 'ওষুধ খাতের অনেক প্রতিষ্ঠান আর্থিক চাপে থাকায় তারা সময় নিচ্ছে।'

বিকন মেডিকেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এপিআই উৎপাদনের ক্ষেত্রে ওষুধশিল্পে আরও গবেষণা ও উন্নয়ন প্রয়োজন।'

২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পর পেটেন্ট আইন এড়াতে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোরকে নিজস্ব এপিআই ফর্মুলা তৈরি করতে হবে।

'ওষুধশিল্পকে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এপিআই প্রয়োজন,' বলে মন্তব্য করেন তিনি।

'দেশে কারখানাগুলো অজৈবিক ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় তাদের জৈবিক ওষুধ তৈরি করতে হবে' উল্লেখ করে মঞ্জুরুল আলম বলেন, 'আমরা নিজস্ব এপিআই তৈরির প্রয়োজনীয়তা আগে থেকেই বুঝতে পেরেছি। তাই এই শিল্পপার্কে কারখানার প্রস্তুতি নিয়েছি।'

এসিআই হেলথকেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মহিবুজ জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্যাস সংযোগ পাওয়ার পর কারখানার কাজ শুরু করবো।'

তিনি জানান, চলমান অর্থনৈতিক সংকট ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই শিল্পপার্কে বিনিয়োগের পরিকল্পনা পিছিয়ে গেছে।

বিসিকের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কুমার ভৌমিক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দ্রুত শিল্পপার্কে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। তিতাসের সঙ্গে কথা হয়েছে। পানি ও অন্যান্য ইউটিলিটি দেওয়া হয়েছে। গ্যাস সরবরাহের পর প্রতিষ্ঠানগুলোকে কারখানা স্থাপনের জন্য বলা হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'স্কয়ার ও বেক্সিমকোর মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো প্লট পেলেও এখনো কারখানার কাজ শুরু করেনি। যেসব প্রতিষ্ঠান এখনো কারখানার কাজ শুরু করেনি তাদের সঙ্গে আমরা শিগগিরই বসব। আগামী মাসে এ কেন্দ্রে গ্যাস পৌঁছাবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Child rape cases rise nearly 75% in 7 months

Child rape cases in Bangladesh have surged by nearly 75 percent in the first seven months of 2025 compared to the same period last year, according to data from Ain o Salish Kendra (ASK).

5h ago