দেশ লুটেরা গোষ্ঠী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে: আনু মুহাম্মদ

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় শক্তি খুব সংঘবদ্ধ, তারা সংগঠিত। এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে জনগণের শক্তি বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। 

আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে 'নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি এবং দফায় দফায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি রুখে দাঁড়াও' শীর্ষক নাগরিক সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আনু মুহাম্মদ বলেন, 'এ দেশটি শাসকগোষ্ঠী, লুটেরা গোষ্ঠী দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এবং তাদের অনুগ্রহে আমরা টিকে আছি, বেঁচে আছি এই বোধ থেকে দেশের জনগণ মুক্ত না হলে এবং দেশের ওপর জনগণের মালিকানা বোধ তৈরি না হলে ক্ষমতা তৈরি করার রাজনীতির বিকাশ হবে না।'

তিনি আরও বলেন, 'একটি দেশে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, জনসমর্থন, জনসম্মতি ছাড়া কর্তৃত্ব এবং ফ্যাসিবাদী বৈশিষ্ট্য নিয়ে একটি সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকলে এর পরিণতি কী হয়, এটি দেশের জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি ও মানুষের জীবনযাত্রা দেখে স্পষ্ট হয়। সুতরাং এটি লড়াইয়ের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সম্পর্কিত। এর বিরুদ্ধে সর্বশক্তি নিয়োগ করতে হবে, এ ছাড়া আমাদের কোনো পথ নেই।'

এ লড়াইয়ে দেশের জনসাধারণ সর্বশক্তি নিয়োগ করবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

সমাবেশে সাংবাদিক আবু সাঈদ খান বলেন, 'দেশের চাল, ডাল, তেল, আটা ও পেঁয়াজের ব্যবসা মুষ্টিমেয় লোকের হাতে চলে গেছে। এখানে মধ্যবিত্ত ও ছোটখাটো ব্যবসায়ী যারা আগে ছিল তারা যদি থাকতো তাহলে বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি হতো না। সে কারণে দেশের বাজার ব্যবস্থার সংস্কার করা দরকার।'

তিনি বলেন, 'বাজারে জিনিসের দাম বেড়ে গেছে, সরকারের তো কোনো ক্ষতি নেই, তাদের লোকজনের এতে দুঃখও নেই। আগে একটা ব্যাপার ছিল ভোটের সময় জবাবদিহিতা করতে হতো, কিন্তু এখন তো আর ভোট হয় না, সে কারণে তাদের জবাবদিহিতাও করতে হয় না।'

অর্থনৈতিক সংকট রাজনৈতিক সংকট থেকে আলাদা নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহা মীর্জা বলেন, 'বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। এর ফলে মানুষের জীবনযাপনের মান হুমকিতে  পড়েছে। আমরা সবাই দুঃখে আছি, কষ্টে আছি।'

তিনি বলেন, 'দুর্ভাগ্যজনক বিষয় স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও আমাদের দেশের কৃষক, যারা খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত, তারা ফসলের ন্যায্য দাম পায় না।' 

সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে চিকিৎসক ডা. হারুন অব রশীদ, গণমুক্তি ইউনিয়নের সভাপতি নাসির উদ্দীন আহমেদ নাসু ও বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন কেন্দ্রীয় ফোরামের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী এবং বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অনেক মানুষ সংহতি জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Life insurers mired in irregularities

One-fourth of the life insurance firms in the country are plagued with financial irregularities and mismanagement that have put the entire industry in danger.

7h ago