‘হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেও দেশে কেন বিদ্যুৎ সংকট’

‘জ্বালানি সংকটের কথা বলে দেশের মানুষের সর্বনাশ করে বাংলাদেশে কোনো কয়লা খনি করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর ও খনিজসম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
ছবি: স্টার

'জ্বালানি সংকটের কথা বলে দেশের মানুষের সর্বনাশ করে বাংলাদেশে কোনো কয়লা খনি করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর ও খনিজসম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

আজ শুক্রবার ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, 'যে প্রকল্প মানুষের সর্বনাশ ডেকে আনবে, সে ধরনের প্রকল্প আমরা মানব না।'

'বিদেশি চক্রকে খুশি করতে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের নামে গত ১১ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বিদেশি চক্রকে। কিন্তু এরপরও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়নি', বলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। 

তিনি সরকারের প্রতি প্রশ্ন তোলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করেও দেশে কেন বিদ্যুৎ সংকট?

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, 'ফুলবাড়ীবাসীর সঙ্গে সম্পাদিত ৬ দফা চুক্তি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি বরং ফুলবাড়ী রক্ষার আন্দোলনকারীদের নামে মামলা করা হয়েছে। আগামী অক্টোবরের মধ্যে ৬ দফা চুক্তি বাস্তবায়ন ও মামলা প্রত্যাহার করা না হলে ডিসেম্বরে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।'

স্থানীয় তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় গণফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ-এর সম্পাদক মল্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন নান্নু, ওয়ার্কাস পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য হবিবর রহমান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র নাথ সরেন, মজদুর পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সামশুল আলম প্রমুখ। 

এর আগে ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের নেতৃত্বে তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং সাবেক মেয়র মর্তুজা সরকার মানিকের নেতৃত্বে ফুলবাড়ী রক্ষা কমিটি পৃথক র‌্যালি বের করে। র‌্যালিগুলো ফুলবাড়ী পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফুলবাড়ী আন্দোলনে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। 

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিলের দাবিতে গণআন্দোলন গড়ে উঠে। এ সময় তৎকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয় আমিন, তরিকুল ও সালেকীন। গুলিবিদ্ধ হয় ২ শতাধিক মানুষ। তখন থেকে ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

 

Comments