‘এবার ঈদ একটু ভিন্ন, বন্ধুরা সবাই রোমাঞ্চিত’

Nahid Rana
ঈদের পোশাকে নাহিদ রানা

মুঠোফোন তুলেই নাহিদ রানা বললেন, 'ভাই, বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে আছি, একটু পরে ফোন দিচ্ছি।' সেই পর  এলো আরও বেশ খানিকটা সময় পেরিয়ে। কৈফিয়ত দিয়ে বললেন, 'বাড়িতে এলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম অনেকদিন পর।'  মিনিট কয়েকের আলাপচারিতায় জানালেন, এবার তার বাড়ি ফেরাটা একটু ভিন্ন। মাত্রই জাতীয় দলে খেলে এসেছেন এর রেশ তো থাকবেই।

তিন-চার বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দূরে থাক, স্বীকৃত ক্রিকেটের ধারেকাছেও ছিলেন না নাহিদ। বয়স ১৮ পেরুনোর পর প্রথম ক্রিকেট বল হাতে নিয়ে গতির তোড়ে লাফে লাফে এগিয়ে এসে পড়েছেন জাতীয় দলের দুয়ারে। 

এবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিলেটে টেস্ট অভিষেক হয় নাহিদের। অভিষেক টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট। তবে গতির ঝাঁজ দেখিয়েছে দেশের ক্রিকেটে দিয়েছেন নতুন এক বার্তা। স্বাভাবিকভাবেই পাড়া-প্রতিবেশী, স্বজন, বন্ধুদের কাছে কদর একটু হলেও বেড়েছে। দ্য ডেইলি স্টারকে বললেন এবারের ঈদ একটু হলেও ভিন্ন, 'এবার তো একটু ভিন্ন, বন্ধুরা সবাই রোমাঞ্চিত। জাতীয় দলে খেলালাম, সবাই সেটাই জিজ্ঞেস করছে। সবাই খুশি, প্রশংসা করছে। আনন্দ করছে। মজা করছে।'

ঈদে আর সব তরুণের মতই নাহিদের মূল উৎসব কাটে বন্ধুদের ঘিরে। ম্যারাথন আড্ডা আর ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ এবারও থাকছে আরও ভালোভাবে, 'সকালে ঈদের নামাজ পড়ি। তারপর খেয়ে দেয়ে বন্ধুদের নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। কোথায় ঘুরতে গেলাম, আড্ডা দিলাম। এসব করে কেটে যায় আরকি। কাছের মানুষ সবাইকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করব।'

জাতীয় দলে খেলে ফিরে ঈদে পরিবারের সবাইকে উপহার দিয়েছেন, সেটাও তার একটা ভালো লাগা, তবে পরিবারের কাছ থেকে তৈরি হয়নি নতুন কোন চাহিদা, 'অবশ্যই উপহার দিতে তো ভালো লাগে। তবে বাসার লোকজন আগে যেমন ছিলো, একই রকম আছে।'

প্রথম টেস্টে পারফরম্যান্স অম্ল-মধুর। প্রচুর আলগা বল দিয়ে রান দিয়েছেন আবার গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেটও এনেছেন। আপাতত নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে স্রেফ উপভোগ করার পরামর্শ পেয়েছেন দল থেকে, 'যতটুকু যা হয়েছে আমি খুশি, আলহামদুলিল্লাহ। বড় ভাইরা (টিম মেট) বলছিলেন, 'তুই উপভোগ কর, আর কিছু না।"'

উত্তরবঙ্গের ছেলে নাহিদ জাতীয় দলে সবার ছোট হওয়ায় কদর পেয়েছেন বাড়তি। সবার সঙ্গেই তার সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তবে তার কাছাকাছি এলাকার হওয়ায় শরিফুল ইসলামের সঙ্গে খাতির একটু বেশি, 'সবার সঙ্গেই আমার সম্পর্ক ভালো।  শরিফুল ভাইয়ের সঙ্গে এমনিতে বেশি ভালো। উনার বাসা পঞ্চগড়, আমার চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ওই হিসেবে সম্পর্কটা খুব ভালো। মজা করতে হলেও শরিফুল ভাইয়ের সঙ্গে করা হয়। সিনিয়র ভাইরাও খুব হেল্পফুল। তাদের কিছু জিজ্ঞেস করলে পরামর্শ দিয়েছে।'

মাত্রই ক্যারিয়ার শুরু হলো। এখনো লক্ষ্য ঠিক করেননি ২১ পেরুনো ডানহাতি পেসার। কোচরা বলছেন উপভোগ করতে। সেই মন্ত্রই ধারণ করতে চান। তবে যেহেতু গতিই তার মূল সামর্থ্যের জায়গা ফিটনেস নিয়ে বাড়তি নজর নাহিদের। খাদ্যভাসেও থাকতে চান সতর্ক,  'ফিট থেকে যখন যেখানে সুযোগ পাই নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা করব।  সময়মত খাওয়া দাওয়া, জিম, বিশ্রাম মানে ঘুমানো এসব গুরত্ব দিতে চাই। খাদ্যভাস এগুলো ধরেন আলাদা ধরণের, এসব সচেতন হয়ে মেন্টেন করি। লাইফস্টাইল ঠিক রাখার চেষ্টা করি, করবও।'

Comments

The Daily Star  | English

Wait for justice: 21 years and counting

The final judgment in the cases is now pending with the Appellate Division as trial proceedings have been completed at the lower court and HC Division

11h ago