১০০ বছর পর গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদে ঈদের নামাজ

ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদ। ছবি: সংগৃহীত

১০০ বছর পর নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে গ্রিসের থেসালিনিকির ঐতিহাসিক মসজিদ ইয়েনি।

গ্রিসে ঠিক ১০০ বছর আগে মুসলিমরা যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর অনেক মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদ।

জানা গেছে, গ্রিসের ঐতিহাসিক ইয়েনি যামি মসজিদে ১০০ বছর নামাজ আদায় বন্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অর্থোডক্স খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠদের দেশটিতে গত শতক থেকেই এ সিদ্ধান্ত বহাল ছিল। 
সম্প্রতি, ওই সিদ্ধান্তের বিষয়ে মত পাল্টেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এক শতাব্দি পর গত বুধবার খুলে দেওয়া হয় মসজিদটি। পরে মুসলিমরা সেখানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।

৯৮ শতাংশ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীর দেশ গ্রিস। দেশটিতে মুসলিমদের সংখ্যা মাত্র ২ শতাংশ।

অনন্য স্থাপত্যশৈলীর প্রাচীন নিদর্শন ইয়েনি যামি মসজিদটি কখনো ব্যবহার হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে, কখনোবা জাদুঘর। 

গ্রিসের এক মুসলিম নাগরিক জানান, গ্রিসে মুসলিম আর সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এ ধরনের উদ্যোগ তারই বার্তা দেয়। 

তিনি বলেন, 'আমার দেশ, আমার ধর্মকে সম্মান করছে তারা। প্রার্থনা করতেও সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। এটি খুবই ভালো আর গুরুত্বপূর্ণ খবর।'

অটোম্যান শাসনামলে মসজিদটি তৈরি হয়েছিলো মূলত ডনমেহ সম্প্রদায়ের জন্য, যারা ইহুদি থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। 

১৯২৩ সালে গ্রিস ও তুরস্কের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের সংখ্যালঘু মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে নাগরিক বিনিময় হয়। এর পর ওই মসজিদে মুসলিমদের প্রার্থনা বন্ধ হয়।

গ্রিসের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে অবস্থিত এই মসজিদ সম্পর্কে অজানা ছিলেন অনেকেই। সম্প্রতি, দেশটির কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে মসজিদটিতে ঈদের নামাজে অংশ নেন ৭০ জন মুসলিম।

এ সময় একজন বলেন, 'আমাদের বলা হয়েছে ১০০ বছরের মধ্যে এই প্রথম নামাজের জন্য মসজিদটির দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে। তাই নামাজ পড়তে এসেছিলাম। এতদিন এটাকে জাদুঘর হিসেবে চিনলেও, জানতাম না এটা একটা মসজিদ। প্রায় ৬৩ বছর ধরে এখানে আছি, আজই প্রথম দেখলাম।'

প্রায় এক শতাব্দীর বেশি সময়ের আগে (১৯০২) নির্মিত মসজিদটির স্থাপত্যে দেখা মেলে ইসলামিক কারুকার্যের। ১৯০২ সালে ইতালিয়ান স্থপতি ভিতালিনো পোসেলির হাত ধরে গড়ে ওঠে অনন্য নিদর্শনটি।

ইউরোপের দেশ গ্রিসের অধিকাংশই অর্থোডক্স খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। ২০২০ সাল পর্যন্তও দেশটিতে মুসলিমদের জন্য ছিল না কোনো মসজিদ। 

২০২০ সালে এথেন্সের ভোটানিকোসে প্রথম সরকারিভাবে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। মসজিদটি এখনো চালু আছে। 

এবারের ঈদুল ফিতরেও একমাত্র সরকারি ওই মসজিদে হাজারো মুসলিম জামাতের নামাজ আদায় করেন। পাশাপাশি এথেন্সের বিভিন্ন এলাকায় বাংলাদেশিসহ এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মুসলিম কমিউনিটির প্রতিষ্ঠিত অসংখ্য মসজিদ আছে যেগুলাতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

এছাড়া, নেয়া মানোলদায় বিশাল জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছ। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অর্থায়নে ক্রয়কৃত জায়গায় নির্মিত মসজিদ মাঠে ঈদের জামাতে হাজারো মুসলিমের ঢল নামে।

Comments

The Daily Star  | English
US wants Bangladesh trade plan,

Reducing US trade GAP: Dhaka turns to Boeing, wheat imports

Bangladeshi officials are preparing for a third round of talks in Washington next week

11h ago