ফুলে ফুলে প্রাণ পেল পড়ে থাকা ছাদ

ছাদটিতে এখন ২৫০ জাতের ফুলের চারা আছে। ছবি: স্টার

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা কৃষি অফিসের ছাদটি আদতে অব্যবহৃতই ছিল। সেই পড়ে থাকা জায়গাটিতেই এখন ফুটছে প্রায় ২৫০ জাতের ফুল। ফুলে ফুলে প্রাণ পাওয়া ওই ছাদটি এখন অনেকের আকর্ষণ।

এই উদ্যোগের মূল কারিগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন। নিয়মিত কাজের বাইরে অনেকটা শখের বশে গাছ-গাছালির প্রতি ভালোলাগা-ভালোবাসা থেকেই এই কাজটি করেছেন তিনি।

ছবি: স্টার

মনোয়ার হোসেন জানান, এখানে যোগ দেওয়ার পর প্রাথমিকভাবে প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করে ছাদটিকে ফুল চাষের উপযোগী করে তুলতে শুরু করেন তিনি। গাছ লাগানোর জন্য জোগাড় করা হয় রঙয়ের খালি পাত্র, সিমেন্টের বস্তা, পোড়ামাটির টব, প্লাস্টিকের হাফ ড্রাম। দোআঁশ মাটি, কেঁচো সার, কোকো পিট, কম্পোস্ট, মোটা বালি, গোবর, পচা পাতা, ডিমের খোসা, সরিষার বীজ এবং প্রয়োজনীয় স্বল্প পরিমাণ রাসায়নিক সার দিয়ে তৈরি করা হয় চাষের মাটি। চারা জোগাড় করা হয় আশপাশের বিভিন্ন নার্সারি ও অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে।

এই মুহূর্তে ছাদটিতে দেশি-বিদেশি ৩৯ জাতের গোলাপ, ১৩ জাতের জারবেরা, ২৩ জাতের রেইন লিলি, মরুভূমির গোলাপ নামে পরিচিত ৫০ জাতের অ্যাডেনিয়াম, আট রকমের গ্ল্যাডিওলাস, ১০ রকমের কাঠ গোলাপ, তিন জাতের চন্দ্রমল্লিকাসহ ২৫০ জাতের ফুলের চারা আছে।

ছবি: স্টার

পাশাপাশি এই ছাদবাগানে কয়েক জাতের আম, কলা, লেবু ও ড্রাগনের মতো কিছু ফল এবং পুদিনা, তুলসি ও লেটুস পাতার মতো কিছু ভেষজ ও ঔষধি গাছের চারাও লাগিয়েছেন মনোয়ার হোসেন।

কৃষি অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শঙ্কু লাল দাস বলেন, 'আগে বছরের কিছু সময় ছাদটিতে সীমিত আকারে সবজি চাষ করা হতো। স্যার (মনোয়ার হোসেন) আসার পর বাগান তৈরির কাজ শুরু করেন।'

ছবি: স্টার

সম্প্রতি ছাদবাগানটিতে গিয়ে দেখা যায়, অনেক প্রজাতির ফুলের কারণে ছাদটিতে প্রচুর মৌমাছির আনাগোনা থাকায় সেখানে একটি মৌমাছির বাক্সও বসানো হয়েছে।

বাগানটি গড়ে তোলা মনোয়ার বলেন, 'নিজের হাতে লাগানো গাছগুলোতে ফুল ফুটলে খুব আনন্দ হয়। অনেকে ফুল দেখতে এই ছাদে আসেন। প্রকৃতিকে ভালোবাসতে অনুপ্রাণিত হন।'

এলাকার কেউ ছাদবাগান করতে চাইলে এই কৃষি কর্মকর্তার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাসও দেন তিনি।

তিন বন্ধু মিলে ছাদবাগানটি দেখতে গিয়েছিলেন উপজেলার পাখিয়ালা এলাকার বাসিন্দা সেতু আহমেদ। তিনি বলেন, 'ওটা তো ছোটখাটো একটা পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। অনেকেই সেখানে গিয়ে কোলাহলমুক্ত পরিবেশে কিছুক্ষণ সময় কাটান। ছবি তোলেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Rohingya influx: 8 years on, repatriation still elusive

Since the repatriation deal was signed with Myanmar in November 2017, Bangladesh tried but failed to send Rohingyas back.

11h ago