টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

প্রায় বিস্মৃত এক মাঠে এবার খেলবে বাংলাদেশ

Arnos Vale Ground

সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নোস ভ্যাল গ্রাউন্ডে সর্বশেষ কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিলো ঠিক ১০ বছর আগে। ২০১৪ সালে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিপক্ষ ছিলো বাংলাদেশই! এরপর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় নির্বাসিত কিংসটাউনের এই মাঠে এবার বিশ্বকাপ দিয়ে ফিরছে খেলা।

বৃহস্পতিবার এই মাঠেই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে নেদারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ, ১৭ জুন খেলবে নেপালের বিপক্ষে। টেস্ট ছাড়াও আর্নোস ভ্যালেতে বাংলাদেশ খেলেছে দুইটা ওয়ানডে ম্যাচ। সেই স্মৃতি আরও পুরনো। ২০ বছর আগে ২০০৪ সালের সফরে এই ভেন্যুতে বাংলাদেশের দুটি ওয়ানডে রাখা হয়েছিলো।

তবে কখনই সেন্ট ভিনসেন্টে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি খেলা হয়নি। অবশ্য এখানে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচই হয়েছে স্রেফ দুটি, তাও সেই ২০১৩ সালে। সেই দুই ম্যাচে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান। মজার কথা হলো এই মাঠে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিও ওই দুটিই। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল)-এর কোন ম্যাচ কখনই হয়নি আর্নোস ভ্যালেতে।

সেন্ট ভিনসেন্টের এই মাঠ ওয়ানডের জন্য প্রসিদ্ধ ছিলো এক সময়। এখানে মাত্র তিন টেস্ট আর দুইটা টি-টোয়েন্টি হলেও ওয়ানডে হয়েছে ২৩টি। ১৯৮১ সাল থেকে এখানে নানান সময়ে খেলেছে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশ। তবে ২০১২ সালের পর আর কোন ওয়ানডে ম্যাচ পায়নি আর্নোস ভ্যাল।

বাংলাদেশের বর্তমান স্কোয়াডের খেলোয়াড়দের মধ্যে কিংসটাউনের এই মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা আছে কেবল সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহর। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে টেস্ট খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ২০০৯ সালে এখানে টেস্ট খেলেন সাকিব। সেই টেস্টটি বাংলাদেশের জন্য বেশ স্মরণীয়। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথমবার তাদের মাঠে টেস্টে হারিয়েছিল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। যদিও সেই সিরিজে মূল খেলোয়াড়রা বিদ্রোহ করায় তৃতীয় সারির দল নামাতে হয়েছিলো ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।

অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি মর্তুজার একমাত্র টেস্টও সেটি। সেই টেস্টে হাঁটুতে চোট পেয়ে লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে যান মাশরাফি। সাকিব দায়িত্ব নিয়ে জেতান বাংলাদেশকে। পরের সময়ে দেশের ক্রিকেটের নেতৃত্বের প্রেক্ষাপটও বদলে যায়।

সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রানাডিয়ান্স ক্যারিবিয়ান দ্বীপে ছোট্ট স্বাধীন রাষ্ট্র, মোট জনসংখ্যা মেরেকেটে লাখ খানেক। প্রাকৃতিক বিপুল সৌন্দর্য থাকলেও  এখানে সুযোগ সুবিধা অপ্রতুল। যে মাঠে এবার বিশ্বকাপের ম্যাচ হবে সেখানে ফ্লাড লাইটই লাগানো হয়েছে সম্প্রতি। আগামী ১৪ জুন দক্ষিণ আফ্রিকা-নেপাল ম্যাচ দিয়ে প্রথম দিবারাত্রির ম্যাচ দেখবে সেন্ট ভিনসেন্টের মানুষ।

পর্যাপ্ত খেলা না হওয়ায় সেন্ট ভিনসেন্টে উইকেট কেমন আচরণ করবে তা বোঝা মুশকিল। ২০১৩ সালে এখানে যে দুই টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হয়েছে তাতে খুব বেশি রান হয়নি। প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৫২ রানে থামিয়ে ২ উইকেটে জেতে পাকিস্তান। সেই ম্যাচে শহিদ আফ্রিদির ঝড়ের পাশাপাশি বাঁহাতি স্পিনে ৩ উইকেট নিয়ে প্রভাব ফেলেছিলেন জুলফিকার বাবর। আরেক ম্যাচে পাকিস্তান ১৩৫ রান করেও স্পিনারদের ঝলকে ম্যাচ জিতে যায়। দুই দলেরই স্পিনাররা মিলে নিয়েছিলেন ১১ উইকেট।

১১  বছর আগে স্পিনাররা দাপট দেখালেও বর্তমানে উইকেটের কি হাল তা নিয়ে কোন ধারণা করা যাচ্ছে না। হয়ত একটা ম্যাচ গেলেই তবে আঁচ করা যাবে। প্রথম ম্যাচটাই খেলবে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস। দিনের আলোয় হওয়ায় স্পিনারদের প্রভাব থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

Comments

The Daily Star  | English

Iran, Israel launch new attacks after Tehran rules out nuclear talks

Israel's war with Iran entered its second week on Friday with the Israeli military chief warning of a "prolonged campaign"

4h ago