স্বামীর কবরের পাশেই ঘর চান লালন অনুসারী চায়না বেগম

নিজের ঘর থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদ ও সেখানেই আবার ঘর করে দেওয়ার দাবিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন চায়না বেগম। ছবি: স্টার

নিজের ঘর থেকে উচ্ছেদ হওয়া লালন অনুসারী চায়না বেগম অন্য কোথাও থাকতে চান না। তিনি তার জমিতে স্বামীর কবরের পাশেই ঘর করে থাকতে চান।

চায়না বেগমের ঘর ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় লালন আখড়ার সামনে মানববন্ধন করেছে সাধু সমাজ। সেখানে চায়না বলেন, 'আমি স্বামীর মাজারেই থাকব। ওইখানেই আমার ঘর করে দেওয়া লাগবে। আমার যেমন ঘর ছিল, তেমন ঘরই করে দেওয়া লাগবে। আমি অন্য কোনোখানে থাকব না।'

গত ২৬ জুন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামে চায়না বেগমের ঘর ভেঙে তাকে উচ্ছেদ করেন ওই এলাকার একটি গোষ্ঠী। এ বিষয়ে চায়না বেগম থানায় অভিযোগ জানালে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে অন্য জায়গা ঘর করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তবে সেই সিদ্ধান্ত মানেননি চায়না বেগম।

কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় লালন আখড়ার সামনে সাধুদের মানববন্ধন। ছবি:স্টার

এমনকি ওই বৈঠকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ চায়না বেগমের। তিনি মানববন্ধনে বলেন, অন্যের জমি ও কিছুটা সরকারি জায়গায় আমাকে ঘর করে দিতে চাচ্ছে। কিন্তু কয়দিন পর ওই জায়গা থেকেও আমাকে বিদায় করে দেবে। আমি আমার স্বামীর মাজারে যেতে পারব না, সাধুসঙ্গ করতে পারব না। আমি সেই জন্যই ওই সিদ্ধান্ত মানতে পারছি না। আমার জায়গায়ই আমি থাকব।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ভেকধারী হৃদয় সাধু বলেন, 'সত্য সুপথ চেনার জন্য যারা শুভ্রসাদা পোশাক পরে ঝোলা কাঁধে নিয়ে সর্বত্যাগী হয়ে মানুষের মানবতাকে জাগ্রত রেখেছেন, আজ সেই আলোকিত মানুষের চোখে জল গড়িয়ে পড়ছে ফোটায় ফোটায়। আমাদের বোধকে জাগ্রত করতে হবে, বাউলরাও মানুষ, তারা পশু নয়। আজ চায়না বেগমের যে করুন দশা, তা আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও হবে। এরজন্য আগে বোধকে জাগ্রত করতে হবে।'

পরে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজার কাছে স্মারকলিপি জমা দেন চায়না বেগম ও তার সঙ্গীরা। সেখানেও স্বামীর কবরের পাশেই থাকার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন ওই বৃদ্ধা। পরে জেলা প্রশাসক উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, তার ভিটেমাটিতে বাড়ি করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক হিসেবে আমার যতটুকু সহায়তা করার ক্ষমতা রয়েছে, আমি ততটুকু সহায়তা প্রদান করব।

চায়না বেগমকে হুমকি প্রদানের বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, এ বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করে, সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করব।

Comments

The Daily Star  | English

Effective tariff for RMG exports to US climbs to 36.5%: BGMEA

The tariff will be a bit less if 20% of the cotton used in garment production is sourced from the USA

40m ago