পটুয়াখালীতে ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হচ্ছে অক্টোবরে

পটুয়াখালী, কলাপাড়া, তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র,
কলাপাড়া উপজেলায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক দ্বিতীয় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চলতি বছরের অক্টোবর থেকে উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: সোহরাব হোসেন

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

কেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের প্রথমটি অক্টোবরে উৎপাদন শুরু করবে। এই ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। এছাড়া দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন শুরু হবে ডিসেম্বরে।

এটি কলাপাড়া উপজেলায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দ্বিতীয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর কাছেই পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র অবস্থিত।

আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেড (আরএনপিএল) নামের যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠান নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন লিমিটেড ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড।

২৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৫০ একর আয়তনের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের আগস্টে।

এটি পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার উত্তরে রামনাবাদ নদীর তীরে অবস্থিত।

প্রকল্প পরিচালক তৌফিক ইসলাম বলেন, ভৌত কাঠামোসহ আনুষঙ্গিক সব কাজ শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, পায়রা প্লান্টের বিদ্যমান সঞ্চালন লাইন ব্যবহার করে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করতে ২০ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া বরগুনার আমতলী উপজেলায় একটি সুইচিং স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বলেন, 'দেশের বার্ষিক চাহিদার ১০ শতাংশ মেটানোর জন্য এই কেন্দ্রটি পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম।'

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াট এবং পিক আওয়ারের চাহিদা প্রায় ১৭ হাজার মেগাওয়াট।

মোট চাহিদার মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত হয় প্রায় ২৫ শতাংশ বা ৬ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) শওকত ওসমান বলেন, শক্ত কয়লা ব্যবহারের পরিবর্তে তারা গুঁড়ো কয়লা ব্যবহার করবেন, কারণ এটি বেশি কার্যকরী এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের মতো ক্ষতিকারক পদার্থ নির্গমন কমায়।

জানতে চাইলে সহকারী প্রকৌশলী শাহরিয়ার হাসান বলেন, এটি একটি অত্যাধুনিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, যেখানে কম কয়লা পুড়িয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে, ফলে পরিবেশ দূষণ কমবে।

আরপিসিএল-নরিনকো সূত্রে জানা গেছে, এই প্ল্যান্টে ফ্লাই অ্যাশ সাইলো, ফুয়েল-ওয়েল পাম্প, বৃষ্টির পানি ধরে রাখা, ফায়ার স্টেশন পরিষেবা এবং অগ্নিনির্বাপক পানির ট্যাঙ্ক ছাড়াও বয়লার, পাওয়ার হাউস, টারবাইন, জেনারেটর, চিমনি ইত্যাদি সাধারণ অবকাঠামো আছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্জ্য পানি সংরক্ষণাগার বেসিন, প্রশাসনিক ভবন, প্রকৌশল ভবন, মাল্টিপারপাস হল, ওয়ার্কশপসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।

এছাড়া শ্রমিকদের ডরমেটরি, ক্যান্টিন ও মসজিদের পাশাপাশি আমদানি করা কয়লা খালাসের জন্য কনভেয়ার বেল্টসহ একটি আধুনিক জেটি নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে।

এছাড়া প্লান্টের মূল ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে তারা জানান, বর্তমানে এই প্রকল্পে ৯ হাজার ৯৭২ জন বিদেশি এবং ৫ হাজার ৭ জন বাংলাদেশি কাজ করছেন।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক দ্বিতীয় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চলতি বছরের অক্টোবর থেকে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে। ছবিটি সম্প্রতি তোলা। ছবি: সোহরাব হোসেন

Comments

The Daily Star  | English
National election

Political parties must support the election drive

The election in February 2026 is among the most important challenges that we are going to face.

6h ago