রাবিতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি, ২ সাংবাদিককে লাঞ্ছিত

সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলাকালে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে তুলে নেওয়ার চেষ্টাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি হয়। সেই সময় সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দুই সাংবাদিককেও লাঞ্ছিত করে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

আজ বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১টা ১০ মিনিটে রাবি শিক্ষকরা হত্যা, শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানির প্রতিবাদে 'বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের' ব্যানারে ক্যাম্পাসের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের সামনে থেকে মৌন মিছিল বের করেন। রাজশাহীর বিভিন্ন কলেজ ও স্কুলের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থীও শিক্ষকদের এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। সমাবেশ শেষে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যখন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একদল সদস্য লাঠি ও লোহার রড হাতে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ধরে দ্রুত পুলিশ ভ্যানের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। সেটা দেখে শিক্ষক ও অন্য শিক্ষার্থীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তি হয়।

শিক্ষার্থীদের ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার ঘটনা রেকর্ড করার সময় সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দুই সাংবাদিককেও লাঞ্ছিত করেন।

দৈনিক সমকালের রাবি প্রতিনিধি অর্পণ ধর জানান, আন্দোলনকারীদের ইনফরমার হিসেবে উল্লেখ করে সাদা পোশাকধারী পুলিশ তার ঘাড় চেপে ধরে পুলিশ ভ্যানে তোলার চেষ্টা করে।

'আমি সাদা পোশাকের পুলিশকে আমার পরিচয় দিয়েছিলাম এবং আমার গলায় ঝোলানো পরিচয়পত্রও দেখিয়েছিলাম। তারপরও ওই পুলিশ আমাকে জোর করে পুলিশ ভ্যানে তোলার চেষ্টা করেছিল', বলেন তিনি।

ঘটনার পর রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন সাংবাদিকদের বলেন, সাদা পোশাকে কারা ছিলেন, সেটা আমরা জানি না। আমি যা দেখেছি তা হলো, একদল লোক গুন্ডাদের মতো শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কি না, সেটা আমাদের জানায়নি।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা চালিয়েছে।

'কাউকে সন্দেহের বশে গ্রেপ্তার করা ভুল। আমি বলব, দয়া করে এসব বন্ধ করুন। আমরা কখনই মেনে নেব না যে পুলিশ আমাদের ছাত্রদের, আমাদের শিক্ষকদের ওপর হামলা করবে।'

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) মোহাম্মদ হেমায়েতুল ইসলাম ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, খারাপ ব্যবহার করায় এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।

'সেখানে আর কিছুই হয়নি। আমরা কাউকে গ্রেপ্তার করিনি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর চড়াও হওয়ায় হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।'

তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রথমে তাদের দুই সহপাঠীকে তুলে নিয়ে যায়।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে নিয়ে যান এবং তাদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করেন।

Comments

The Daily Star  | English
tax collection target for IMF loan

IMF to continue talks with Bangladesh for near-term agreement

The global lender said such an agreement would pave the way for completing the combined third and fourth reviews

2h ago