দাম্পত্যে ‘৭৭৭ নীতি’

দাম্পত্য
ছবি: সংগৃহীত

প্রেমের সম্পর্কের মতো বন্ধন ঘিরে মানুষের থাকে নানা জল্পনা-কল্পনা, অপেক্ষার প্রহর গোনা। সবশেষে যখন মনের মতো সঙ্গীটি পাওয়া যায়, দাম্পত্য জীবন শুরু হয়, তখন আবার তৈরি হয় নতুন চ্যালেঞ্জ। নিয়মিত জীবনযাপন কিংবা সংসারের ডামাডোলে সম্পর্কের মধ্যকার আলোটি সেই প্রথম ক্ষণের মতোই ধরে রাখতে মানুষকে অবলম্বন করতে হয় নানা কৌশল। এমনই একটি কৌশল হচ্ছে '৭৭৭ নীতি'।

এই নিয়ম অনুযায়ী, 'লাকি নম্বর সেভেন' বেশ কয়েকভাবে কাজে আসে। না, এমন কোনো জাদুবিদ্যা নেই এই সংখ্যায় কিংবা নিয়মটিতে। একটু গভীরে চিন্তা করলে বোঝা যাবে, খুব সহজ-সাধারণ কিছু করণীয় নিয়েই মূল বিষয়টি।

 এই  '৭৭৭ নীতি'তে আছে ৭ সংখ্যাটির সঙ্গে সম্পর্কিত তিনটি বিষয়-

১. প্রতি সাত দিনে একটি ডেট

নাগরিক জীবনের তাড়াহুড়ায় আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে পর্যুদস্ত। বাজারের মূল্যস্ফীতি, রাস্তার যানজট, অফিসের ডেডলাইন, গেরস্থালি কাজকর্ম এই সব কিছু মিলিয়ে জীবনটা যেন পুরোদস্তর একটা হিসেবের খাতা হয়ে ওঠে। তবে মন কি আর এত হিসেব বোঝে? সঙ্গীর থেকে ঠিক সময়ে আকাঙ্ক্ষিত মনোযোগটুকু না পেলেই মন খারাপ হয়ে যায়। সঙ্গীকে অসন্তুষ্ট করতে না চাইলে এবং নিজেদের একটুখানি বিশেষ মুহূর্ত উপহার দিতে চাইলে চেষ্টা করুন প্রতি সপ্তাহে,মানে প্রতি সাত দিনে একটিবার আয়োজন করে ডেটে যাওয়ার।

'ডেট' শব্দটি অধুনা অভিধানে অনেক অর্থই বহন করতে পারে। তবে প্রতিটি সম্পর্কের জন্য তা একেবারে নিজেদের নকশায় তৈরি বিশেষ সময়। কেউ হয়তো খোলা আকাশের নিচে, প্রকৃতির কাছে সঙ্গীর হাত ধরে বসে থাকাকে ডেট ভাবেন। তো কেউ হয়তো দামি রেস্তোরাঁয় মোমের আলোয় সুস্বাদু খাবার আর সঙ্গীর মুখের দিকে তাকিয়ে, হালকা বাজনার সঙ্গে মিলেমিশে যাওয়াকে ডেটের তকমা দেন। তবে ডেট যেমনই হোক না কেন, চেষ্টা রাখা দরকার, জীবনের সব ঝক্কি-ঝামেলার মধ্যেও যেন দুজনে মিলে একটি বেলা নিজেদের মতো করে, কোনো রকম চাপ ছাড়া কাটিয়ে দিতে পারেন।

২. প্রতি সাত সপ্তাহে রুটিনের বাইরে একটি দিন

একেকজনের পছন্দ একেক রকম। তবে অন্য সব কিছু বাদ দিয়ে প্রতি সাত সপ্তাহ অন্তর দুজন বাড়ির গণ্ডির বাইরে একটি সুন্দর দিন কাটিয়ে আসতে পারেন। প্রতিদিনের পরিচিত সেই ঘরের দৈনন্দিন একঘেয়েমি আর ক্লান্তি দূর হয়ে সতেজ অনুভব করবেন ‍দুজনই।

৩. প্রতি সাত মাসে একবার ভ্রমণ

মানুষ ঘর বাঁধে, ঘরে থাকে। কিন্তু তাই বলে তার রক্তে মিশে থাকা ভ্রমণপ্রিয়তা বা রোমাঞ্চ চলে যায় না। বরং যত বেশি চার দেয়ালের জীবন, তত বেশি ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছে ঘুরপাক খায়। একঘেয়ে রুটিনে জীবন কাটাতে কাটাতে ব্যক্তি মাঝে মাঝে নিজের উপরই বিরক্ত হয়ে ওঠে, স্বামী-স্ত্রীর উপর হওয়াটাও তাই অস্বাভাবিক কিছু নয়। একঘেয়ে ভাব কাটিয়ে উঠতে তাই ভ্রমণ হতে পারে অন্যতম সমাধান। ভ্রমণের পর আবার পূর্ণ উদ্যমে নিয়মিত জীবনে ফেরত আসা যায়, এও একটা সুবিধা। তাই যার যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন, প্রতিটি যুগলের উচিত নিজেদেরকে আর্থিক ও মানসিকভাবে প্রতি সাত মাসে একটি অন্তত ট্যুরের পরিকল্পনা করা।

'৭৭৭ নীতি'টা এক নজরে দেখতে বেশ ইতিবাচক বলেই মনে হয়। এর মধ্যে থাকা সহজ, স্বাভাবিক পরামর্শগুলোও বেশ। কিন্তু তাই বলে নিয়মের বেড়াজালে নিজেকে বেঁধে নিয়ে সম্পর্কের স্বাভাবিক গতি যাতে কখনো বাধাগ্রস্ত না হয়, সেটি দেখা জরুরি।

কারণ মনস্তত্ত্ব বা সম্পর্কের ব্যাকরণে যত নিয়মই লেখা থাকুক না কেন, ভুলে গেলে চলবে না যে মানুষ ভিন্ন। ঠিক তেমনই তার জীবনে থাকা সম্পর্কগুলোও এবং সম্পর্কভেদে নিয়মের চেহারাটাও ক্ষণে ক্ষণে পাল্টে যেতে পারে। তাই সম্পর্কের মধ্যে কোনো প্রচলিত নিয়ম নীতি হোক বা না হোক, সুখে-শান্তিতে থাকাটাই বড় কথা।

 

Comments

The Daily Star  | English
Global fashion brands are reaping triple-digit profits on Bangladeshi garments

Fast fashion, fat margins: How retailers cash in on low-cost RMG

Global fashion brands are reaping triple-digit profits on Bangladeshi garments, buying at $3 and selling for three to four times more. Yet, they continue to pressure factories to cut prices further.

12h ago