শ্রমিক বিক্ষোভ

আশুলিয়ায় আজও ৬০ পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা

পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ
আশুলিয়ায় শ্রমিক বিক্ষোভে আজ বুধবার সকালে অর্ধশতাধিক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ছবি: আকলাকুর রহমান/ স্টার

বিভিন্ন দাবিতে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে আজও শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার অন্তত ৬০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার ঘোষণা দিলেও আজ শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে কারখানা থেকে বেরিয়ে আসে।

শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, সকালে আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো এলাকা পর্যন্ত অবস্থিত বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করলেও কাজ না করে বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ শুরু করলে কর্তৃপক্ষ একে একে কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করে।

কিছু কারখানা ছুটি ঘোষণার পর শ্রমিকরা বেরিয়ে গিয়ে অন্যান্য কারখানাগুলোর সামনে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে সেসব কারখানা কর্তৃপক্ষও কারখানা ছুটি ঘোষণা করে।

এই রিপোর্ট লেখার সময় সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এখনও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করছেন।

শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান করায় সড়কটিতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে শিল্প পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা।

শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো এলাকা পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে হামীম, শারমীনসহ অন্তত ৬০টি কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে। সকাল ৮টার পর থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়, পরে একে একে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানাগুলো ছুটি দিয়ে দেয়। শ্রমিকরা এখনো সড়কে রয়েছেন, আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।'

সড়ক অবরোধ প্রসঙ্গে এই কর্মকর্তা বলেন, 'এমনিতেই তো সড়কটি সরু (বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর) তার উপর শ্রমিকরা এই সড়কে নেমে এলে স্বাভাবিকভাবেই যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।'

তবে এই বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কটি ছাড়া শিল্পাঞ্চলের ডিইপিজেডসহ অন্যান্য এলাকাগুলোতে কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে বলেও জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।

এদিকে আশুলিয়ার পলাশ বাড়ি এলাকায় গিলডান বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা নবীনগর চন্দ্রা-মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। গতকাল এ অঞ্চলের অর্ধশত কারখানা বন্ধ ছিল।

বেলা ১২ টার দিকে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় দেখা যায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করছেন ইপিক গ্রুপের হাজারের অধিক শ্রমিক।

শ্রমিকরা জানায়, 'গাড়িভাড়া, খাবারের টাকা, ইনক্রিমেন্ট, মাতৃত্বকালীন ডিউটি কমানো, শ্রমিক হয়রানিকারী কর্মকর্তাদের বহিষ্কারসহ ১২ দফা দাবিতে গত এক সপ্তাহ আগে বিক্ষোভ করেন তারা। শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে মালিকপক্ষ দাবিগুলো মেনে নেয়। কিন্তু তারপর দিনই কারখানা বন্ধ করে দেয়। আজ কারখানা খুললে শ্রমিকরা কাজে যোগদান করলে শ্রমিকদের জানানো হয় কোনো দাবিই মানা হবে না। কাজ করলে করো না করলে বেড়িয়ে যাও। তাই আমরা সড়কে নেমেছি।'

ইপিক গ্রুপের শ্রমিক আবু ইসহাক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আগে আমাদের কোম্পানি ইনসেনটিভ, খাবার টাকা ও গাড়ি ভাড়া দিতো। কোম্পানি এগুলো নোটিশ ছাড়াই বন্ধ করে দিয়েছে। এজন্যই আমরা আন্দোলন করছি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছি। তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছি। মালিক পক্ষের সাথেও কথা বলার চেষ্টা করছি।

যোগাযোগ করা হলে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো এলাকা পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে হামীম, শারমীনসহ অন্তত ৬০টি কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। শ্রমিকরা এখনো সড়কে রয়েছেন, আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করছি।

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

6h ago