কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ, হাসপাতাল ছাড়ছেন রোগীরা

হাসপাতাল ছাড়ছেন রোগীরা
হাসপাতাল ছাড়ছেন রোগীরা। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ঘোষণা করা কমপ্লিট শাটডাউনের দ্বিতীয় দিনে হাসপাতাল ছেড়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীরা। ডাক্তার দেখাতে না পেরে অনেক রোগীই ফিরে যাচ্ছেন। ভিড় বাড়ছে শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে।

গতকাল বুধবার করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিউ) এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একজন চিকিৎসককে মারধরের প্রতিবাদে সকাল থেকে হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসক ও কর্মচারীরা, ঘোষণা দিয়েছেন 'কমপ্লিট শাটডাউন' কর্মসূচির। সেদিন সেনাবাহিনীর একটি দল হাসপাতাল পরিদর্শনে যাওয়ার পর জরুরি বিভাগ সচল করা হলেও অন্যান্য বিভাগ এখনো বন্ধ রয়েছে।

এই হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রায় আট শতাধিক রোগী ভর্তি ছিলেন। শাটডাউনের পর তাদের চিকিৎসা সেবাও বন্ধ হয়ে যায়। ভর্তি থাকা অধিকাংশ রোগীই ইতোমধ্যে হাসপাতাল ছেড়েছেন।

এরকম একজন রোগীর স্বজন নাসির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার স্ত্রীর হৃদরোগের চিকিৎসা চলছে। চারদিন আগে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। তারপর থেকে আশানুরূপ সেবা পাচ্ছিলাম না। কাল থেকে পুরোপুরি সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আজকে স্ত্রীকে নিয়ে অন্য হাসপাতালের খোঁজে রওনা দিচ্ছি।'

বুধবার রাত দেড়টার দিকে হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি থাকা আজিজ নামের একজন রোগী মারা যান। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে দাবি করে তার স্বজনরা সজীব কাজী নামে এক চিকিৎসককে বেধড়ক মারধর করেন। সেই সময় হাসপাতালের আইসিইউ, সিসিইউসহ বিভিন্ন এলাকা ভাঙচুর করা হয়।

এই ঘটনার পর থেকেই বিক্ষুব্ধ অবস্থান নেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীরা। আজ দুপুরেও চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে দোষীদের দ্রুত বিচার ও চিকিৎসকদের কর্মস্থলে স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। সেখানে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক, শিক্ষার্থী, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও উপস্থিত ছিলেন।

ইন্টার্ন চিকিৎসক শাহ তালাল মাহমুদ দিহান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের একজন চিকিৎসককে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। হাসপাতাল ভাঙচুর করা হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা করেনি। আজই মামলা করতে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এ ছাড়া চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা হাসপাতালে ফিরে যাব না।'

হাসপাতালের সুপারিন্টেনডেন্ট ডা. মং টিং ইয়েও শিক্ষার্থীদের দাবি শোনেন এবং পরে সাংবাদিকদের বলেন, 'কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ভাঙচুরের বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তথ্য সংগ্রহ করে আজই মামলা করবেন। এ ছাড়া চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে জরুরি বিভাগ ছাড়া কোথাও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে না।'

হামলার ঘটনায় চারজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হচ্ছেন—কক্সবাজার পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ সেলিম রেজার ছেলে তামিম মোহাম্মদ রেজা (২২) ও তাহসিন মোহাম্মদ রেজা (২২), কালুর দোকান এলাকার সাইফুল আজিমের ছেলে সাইদুল লতিফ সাকিব (২৪) ও টেকপাড়া এলাকার আবু বকরের ছেলে সাইফ বিন সম্রাট।

চিকিৎসকের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগে বুধবার রাতে ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

12h ago