টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬০ লাখ শিশু: জাতিসংঘ
টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রায় ৬০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আজ বুধবার জাতিসংঘের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
প্রায় দুই সপ্তাহ আগে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, লাওস ও মিয়ানমারে আঘাত হানে ইয়াগি। এর প্রভাবে প্রবল ঝড়, বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের শিকার হয় দেশগুলো।
আজ বুধবার থাইল্যান্ডে আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ১৮ জনে। পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে এখন পর্যন্ত মোট ৫৩৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইয়াগির কারণে ৬০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য ও আশ্রয়ের সুবিধা; সবকিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউনিসেফের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক জুন কুনুগি বলেন, 'টাইফুন ইয়াগির আঘাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অরক্ষিত শিশু ও পরিবারগুলো।'
ইউনিসেফের মতে, ভিয়েতনামে নিরাপদ খাবার পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের অভাবে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিতে আছে।
মিয়ানমারে বন্যার কারণে প্রায় চার লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধের মধ্যে থাকা এই জনগোষ্ঠীর জন্য বাড়তি দুর্দশা ডেকে এনেছে এই টাইফুন।
ইউনিসেফ এক বিবৃতে বলেছে, মিয়ানমারে চলমান দুর্বিষহ মানবিক পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে ইয়াগি, যার প্রভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীগুলো আগের চেয়েও গভীর সংকটে পড়েছে।
বুধবার বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, তারা চলতি সপ্তাহে মিয়ানমারে জরুরি সেবা দেওয়া শুরু করবে। পাঁচ লাখ মানুষকে এক মাসের জরুরি খাদ্য বিতরণ করবে সংস্থাটি।
বিশ্লেষকরা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে টাইফুন ইয়াগির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘনঘন দেখা যাচ্ছে।
ইউনিসেফের মতে, জলবায়ু ও মানবিক বিপর্যয়ের কারণে পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শিশুরা অস্বাভাবিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের দাদা-দাদির তুলনায় এই প্রজন্মের শিশুদের ছয়গুণ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Comments