ইলিশের আহরণ বাড়লেও দাম বেশি কেন?

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তথ্য অনুসারে, এক বছর আগের তুলনায় ইলিশের চলতি দাম ৩৭ শতাংশ বেশি।
ইলিশ
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

গত কয়েক বছর ধরে দেশে সবচেয়ে বেশি কাঙ্ক্ষিত মাছ ইলিশের আহরণ বাড়লেও তা এখন সাধারণের নাগালের বাইরে।

গত ৭ অক্টোবর ঢাকার ক্রেতারা আকারভেদে প্রতি কেজি ইলিশ কিনেছেন ৮০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকায়। এক মাস আগের তুলনায় তা আট দশমিক তিন শতাংশ বেশি।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তথ্য অনুসারে, এক বছর আগের তুলনায় ইলিশের চলতি দাম ৩৭ শতাংশ বেশি।

চার বছর আগে প্রতি কেজি ইলিশের দাম ছিল সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, সে সময় মোট আহরণ ছিল প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের ইলিশ আহরণের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জেলেরা পাঁচ লাখ ৭১ হাজার টন ইলিশ সংগ্রহ করেছেন। এটি ইলিশের দাম ক্রমাগত বেড়ে যাওয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

ইলিশ গবেষক মো. আনিসুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইলিশ আহরণের হিসাব ঠিক আছে বলেই মনে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে এক শ্রেণির মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। এ ছাড়াও, ইলিশের সামাজিক মূল্যও অনেক বেশি।'

মৎস্য কর্মকর্তা ও গবেষকদের মতে, ক্রমবর্ধমান ক্রয়ক্ষমতা ও ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণির কারণে ইলিশের চাহিদা বেড়েছে। শহরের অনেক বিত্তবান সারাবছর খাওয়ার জন্য ইলিশ সংরক্ষণ করেন। তাছাড়া, আহরিত ইলিশের একটি অংশ দেশের বাইরে পাচার হয়ে যায়।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরবরাহ-চাহিদার স্বাভাবিক হিসাবে ইলিশের দাম বিশ্লেষণ করা যায় না।'

তার মতে, 'এটি দুষ্প্রাপ্য পণ্য। এটি সংরক্ষণ করা যেতে পারে। তাই, মাছের সর্বদা একটা প্রিমিয়াম দাম থাকবে।'

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরবরাহ বাড়লে যেকোনো পণ্যের দাম কমে যায়। কিন্তু, ইলিশের আবেগী মূল্য আছে। সব আয়ের মানুষের কাছে এর চাহিদা অনেক। কম আয়ের মানুষও ইলিশ দিয়ে অতিথি আপ্যায়নের চেষ্টা করেন।'

চলমান দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতির কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এত অল্প পরিমাণ রপ্তানির জন্য হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়া উচিত নয়।'

'এক সময় ভেবেছিলাম অন্যান্য মাছের উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইলিশের চাহিদা ও দাম কমে যাবে। কিন্তু দেখছি, প্রতি কেজি ইলিশ দুই হাজার টাকায় পৌঁছালেও মানুষ কিনছে। ইলিশ আহরণ যে বেড়েছে তাতে সন্দেহ নেই। জনসংখ্যা ও অনেকের আয়ও বেড়েছে।'

২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে তিন লাখ ৮৫ হাজার টন ইলিশ আহরিত হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, এরপর থেকে আহরণ বেড়েছে ৪৮ শতাংশ।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh ranks 84th among 127 countries in Global Hunger Index

The level of hunger in Bangladesh this year has been categorised as "moderate"

2h ago