‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়স বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সাময়িক হলে ভালো, দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর’

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করে ছেলেদের ক্ষেত্রে ৩৫ বছর ও মেয়েদের ৩৭ বছর করার জন্য সুপারিশ করেছে সরকার গঠিত এ সংক্রান্ত কমিটি। সরকার যদি এই সুপারিশ স্থায়ীভাবে বাস্তবায়ন করে তাহলে দীর্ঘমেয়াদে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতে, কোটা প্রথা, করোনাভাইরাস মহামারি ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দীর্ঘ সময় সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নানান সমস্যা চলছে। এসব বিবেচনায় সাময়িকভাবে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বা ৩৭ করা যেতে পারে। কিন্তু স্থায়ীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিলে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। চাকরিতে প্রবেশে এত বেশি বয়স বাড়ালে অবসরেও বাড়াতে হবে। এতে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাবে।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অষ্টম শ্রেণী থেকে এইচএসসির পর যেসব সরকারি চাকরি পাওয়া যায়, সেগুলোর জন্য ১৮ বছর বয়সেই যোগ্যতা অর্জন করে ফেলেন শিক্ষার্থীরা। অর্থাৎ বিদ্যমান বয়সসীমায় এসব শ্রেণীর চাকরিপ্রার্থীরা প্রায় ১২ বছর সময় পান। এ ধরণের চাকরি পাওয়ার জন্য ১৮-১৯ বছর সুযোগ থাকা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়।'

তিনি বলেন, 'সরকারি চাকরির জন্য লাখ লাখ আবেদন হয়। বয়স বাড়ালে সেই সংখ্যা আরও অনেক বেড়ে যাবে। দীর্ঘমেয়াদে এ ঝামেলা সামাল দেওয়া কঠিন হবে।'

তার ভাষ্য, 'উচ্চতম গ্রেডে চাকরির ক্ষেত্রে আগামী দুই-তিনটি বিসিএসে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে এই বয়সসীমা বিবেচনা করতে পারে সরকার। এরচেয়ে বেশি সময় বিবেচনায় নেওয়া উচিত হবে না।'

সাবেক এই আমলা বলেন, 'একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর অন্তত এক বছর লাগে সেই প্রক্রিয়া শেষ হতে। অনেক ক্ষেত্রে দুই-তিন বছরও লেগে যায়। যারা ৩৫ বছর বয়সে আবেদন করবেন, তাদের নিয়োগ পেতে পেতে ৩৭-৩৮ বছর বয়স হয়ে যাবে। ওই বয়সে একজন প্রার্থীর কর্মস্পৃহা কমে যায়।'

'আমি মনে করি পড়াশোনা শেষ করার পর যৌবনের এতটা সময় চাকরির পেছনে চলে গেলে উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে অনেকে। আবার ৩৫ বছরের পর উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক জটিলতা তৈরি হবে,' যোগ করেন তিনি।

তবে স্থায়ীভাবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, হিজড়া ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা যথাক্রমে ৩৫, ৪০ ও ৪২ বছর করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser yunus confirms election date

Election in February

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night announced that the general election will be held before Ramadan in February 2026, kickstarting the process of handing over the power to an elected government.

4h ago