ভারত-কানাডা সম্পর্ক তলানিতে, দেশে ফিরছেন কূটনীতিকরা

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে/এপি
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে/এপি

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, ভারতীয় এজেন্টরা কানাডায় হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে এবং তা এখন প্রমাণিত। ভারত এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

এই ঘটনার জেরে কানাডা ও ভারত, উভয় দেশই নিজেদের দেশ থেকে অন্য দেশের ছয়জন করে কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। অর্থাৎ, কানাডা ছয় ভারতীয় কূটনীতিককে দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। ভারতও পাল্টা একই কাজ করেছে কানাডার কূটনীতিকদের সঙ্গে।

কানাডার অভিযোগ, এক বছর আগে কানাডার শিখ নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের ঘটনায় যে ভারতীয় এজেন্টরা জড়িত ছিল, তা এখন স্পষ্ট। তদন্তে বিষয়টি উঠে এসেছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের এই কাজ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বস্তুত, প্রমাণ হাতে আসার পরই ছয় ভারতীয় কূটনীতিককে দেশের ফেরানোর নির্দেশ দেয় কানাডার প্রশাসন।

হরদীপ সিং নিজ্জর। ছবি: এক্স থেকে সংগৃহীত
হরদীপ সিং নিজ্জর। ছবি: এক্স থেকে সংগৃহীত

আলাদা শিখ রাষ্ট্রের জন্য আন্দোলন করছিলেন হরদীপ। এই আন্দোলন 'খালিস্তান আন্দোলন' নামে পরিচিত।

তিনি কানাডার নাগরিক ছিলেন। গত বছর ভ্যানকুভারে খুন হন নিজ্জর। প্রাথমিক তদন্তের পর তখনই কানাডা জানিয়েছিল, এই ঘটনার পিছনে ভারতীয় এজেন্টদের হাত আছে। রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সোমবার পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় এবং ওই ধরনের আরো বেশ কিছু ঘটনায় ভারতীয় এজেন্টদের জড়িত থাকার স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে।

ট্রুডোর বক্তব্য

পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখছেন ট্রুডো। ফাইল ছবি: রয়টার্স
পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখছেন ট্রুডো। ফাইল ছবি: রয়টার্স

সোমবার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেছেন, 'সার্বভৌম কানাডার মাটিতে হামলার ঘটনায় কূটনীতিক এবং এজেন্টদের ব্যবহার করে ভারত মস্ত বড় ভুল করেছে।' প্রধানমন্ত্রীর কথায়, 'রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের তদন্তে স্পষ্ট ওই ঘটনায় ভারতীয় কূটনীতিক এবং এজেন্টরা জড়িত ছিল।' ট্রুডো জানিয়েছেন, কানাডার মাটিতে কানাডার নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া তার প্রথম এবং প্রাথমিক কর্তব্য। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা তার কাজ। অন্য কোনো দেশ তার দেশে এসে হত্যার ঘটনা ঘটাবে, তা তিনি কোনোভাবেই মেনে নেবেন না।

মাউন্টেড পুলিশের তদন্ত

কানাডার রয়েল মাউন্টেড পুলিশ। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
কানাডার রয়েল মাউন্টেড পুলিশ। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

মাউন্টেড পুলিশের তদন্ত থেকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। একাধিক সহিংসতার ঘটনায় ভারতীয় এজেন্টদের সক্রিয়তা লক্ষ্য করা গেছে। খুনের ঘটনায় তাদের সরাসরি সংযোগ মিলেছে। কানাডায় বসবাসকারী দক্ষিণ এশীয়দের হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। কানাডার গণতান্ত্রিক সার্বভৌম চরিত্রে আঘাত করা হয়েছে।

তদন্ত চলাকালীন সময়েও ভারতীয় এজেন্টরা কানাডার মাটিতে সক্রিয় ছিল এবং একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

ভারতের জবাব

ট্রুডো ও মোদির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ফাটল। ছবি: রয়টার্স
ট্রুডো ও মোদির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ফাটল। ছবি: রয়টার্স

কানাডার এই পদক্ষেপের পর জবাব দিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কানাডার মন্তব্য ভিত্তিহীন। ভারত বারবার তাদের কাছে তথ্যপ্রমাণ চেয়েছে। কিন্তু কানাডা এখনো পর্যন্ত তা দিতে পারেনি। রাজনৈতিক কারণে কানাডা এই মন্তব্য করছে বলেও অভিযোগ করেছে ভারত। কানাডার পদক্ষেপের পাল্টা জবাব দিতে ভারতও কানাডার ছয় কূটনীতিককে শনিবারের মধ্যে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

রয়টার্স, এপি

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

7h ago