ইসরায়েলকে ঠেকাতে পারব না: যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনি ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। প্রতীকী ছবি: স্টার
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনি ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। প্রতীকী ছবি: স্টার

সাম্প্রতিক সময়ে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলছে হামলা ও পাল্টা হামলা। ইরান আবারও ইসরায়েলকে 'চরম জবাব' দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে হুশিয়ারি দিয়েছে, আরেকবার ইসরায়েলে হামলা করলে দেশটি তাদের পছন্দমতো প্রতিশোধ নেবে এবং সে ক্ষেত্রে তাদেরকে 'ঠেকানো' বা কোনোরকম সীমাবদ্ধতা আরোপের মতো অবস্থায় থাকবে না ওয়াশিংটন। 

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল। তথ্যসূত্র হিসেবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেছে তারা।

অ্যাক্সিওসের প্রতিবেদনে এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তা ও এক সাবেক ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনুরোধে ইরানের পরমাণু অবকাঠামোয় হামলার পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। পরবর্তী লক্ষ্য হিসাবে নির্ধারণ করেন ইরানের তেল উৎপাদন অবকাঠামো। তবে এতেও সায় দেয়নি ওয়াশিংটন।

যার ফলে শুধু ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন অবকাঠামো ও আকাশ হামলা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে ইসরায়েলকে।

মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা ইরানিদের বলেছি: (তোমরা আবার হামলা চালালে) আমরা ইসরায়েলকে ধরে রাখতে পারব না। আমরা নিশ্চিত করতে পারব না যে পরবর্তী হামলাটি আগের বারের মতো সুশৃঙ্খল হবে কিংবা সুপরিকল্পিত ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের বিরুদ্ধে আসবে।'

মার্কিন কর্মকর্তা দাবি করেন সরাসরি ইরানের কাছে এই বার্তা পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। তবে ইসরায়েলি সূত্র জানান, সুইস মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তেহরানের কাছে এই বার্তা পাঠানো হয়েছে।

তেহরান বা ওয়াশিংটন এই প্রতিবেদন বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এই প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা আগেই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে 'চূড়ান্ত জবাব' দেওয়ার হুমকি দেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।

২৬ অক্টোবর ইরানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও অবকাঠামোর বিরুদ্ধে পরিচালিত এই সুনির্দিষ্ট হামলায় অন্তত পাঁচ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে তেহরান।

লেবাননে হামলা চালানোর জন্য রওনা হচ্ছে ইসরায়েলি জেট বিমান। ফাইল ছবি: রয়টার্স
লেবাননে হামলা চালানোর জন্য রওনা হচ্ছে ইসরায়েলি জেট বিমান। ফাইল ছবি: রয়টার্স

এ ঘটনার পর থেকেই ইরানের কর্মকর্তারা পাল্টা হামলা চালানোর হুমকি দিচ্ছেন।

এই হামলার আগে, ১ অক্টোবর ইরান প্রায় ২০০ ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলে হামলা চালায়। দেশটির বেশিরভাগ মানুষ সুরক্ষা থেকে আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ কক্ষগুলোতে চলে যায়। এই হামলায় সামরিক ঘাঁটি ও আবাসিক এলাকার সামান্য ক্ষতি হয়। পশ্চিম তীরে এক ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হন।

বিশ্লেষকদের আশংকা, এই অঞ্চলে উভয় পক্ষের আর কোনো হামলা আসলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আরও বড় আকারে সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ইতোমধ্যে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে এবং লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধে জড়িয়ে আছে ইসরায়েল।

মার্কিন নির্বাচনের আর দুই দিনেরও কম সময় আগে এরকম কিছু হলে বড় বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে হুশিয়ার দেন তারা।

ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম কান শনিবার দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ চিহ্নিত করেছে, ইরানে হামলার প্রাথমিক প্রস্তুতি চলছে। তবে এখনো কবে এই হামলা হবে বা এর মাত্রা কেমন হতে পারে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর বিশ্লেষণ মতে, সরাসরি নিজেদের ভূখণ্ড ব্যবহার না করে ইরাক ও ইয়েমেনের শিয়া আধা সামরিক বাহিনীর সহায়তাই এই হামলা চালাতে পারে তেহরান। এই কৌশলের মাধ্যমে ইরানের ভূখণ্ডে আরেকটি হামলা আসার ঝুঁকি কমাতে চাইছে তেহরান—এমনটাই দাবি করেছেন তারা।

তবে হামলা যেখান থেকেই আসুক, ইরানকে কড়া জবাব দেওয়ার জন্য তদবির চালাচ্ছেন ইসরায়েলি জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা।

অপরদিকে, আরব গণমাধ্যমে শনিবার কিছু ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ইসরায়েলি নৌবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্রবাহী রণতরী সুয়েজ খাল পেরিয়ে লোহিত সাগরে পৌঁছেছে। এই রণতরী অত্যাধুনিক লোরা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে সক্ষম।  এই ক্ষেপণাস্ত্র ৪০০ কিমি দূরত্বের লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে।

 

Comments

The Daily Star  | English

NBR moves to speed up auction of abandoned goods

About 2 lakh tonnes of imported goods left abandoned at Chattogram port alone for years

23m ago