‘দেবী’ নির্মাতা অনম বিশ্বাস আসছেন 'রঙিলা কিতাব' নিয়ে

অনম বিশ্বাস
অনম বিশ্বাস। ছবি: স্টার

'দেবী' সিনেমা নির্মাণ করে বেশ আলোচিত হয়েছেন অনম বিশ্বাস। তার প্রতিটা নির্মাণের মধ্যে প্রতিভার ছাপ খুঁজে পাওয়া যায়। সিনেমা নির্মাণের পাশাপাশি যে কয়েকটি ওয়েব কন্টেন্ট নির্মাণ করেছেন দর্শকরা বেশ পছন্দ করেছেন। পরিচালনার পাশাপাশি গান লিখেও প্রশংসিত হয়েছেন।

তার পরিচালিত নতুন ওয়েব সিরিজ 'রঙিলা কিতাব' আগামী ৮ নভেম্বর ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইতে মুক্তি পাচ্ছে। নতুন ওয়েব সিরিজ মুক্তির আগে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বললেন নির্মাতা।

দেবী, রঙিলা কিতাব দুটিই বই থেকে নেওয়া গল্প। আপনি কি বই থেকে নির্মাণ করতে পছন্দ করেন?

অনম বিশ্বাস: বই পড়া আমাদের জেনারেশনকে ডিফাইন করে। আমার আশেপাশের সবাই বই পড়ত। বই পড়তাম আর কল্পনার জগতে হারিয়ে যেতাম। এই হারিয়ে যাওয়াটা একটা নেশার মতো, বার বার হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করে। আমি ভাগ্যবান যে আমার খুব পছন্দের দুইটা বই থেকে সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজ বানাতে পেরেছি। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে আবারও বানাব। বার বার বানাব।

বই থেকে কোনো কনটেন্ট নির্মাণের ক্ষেত্রে কতখানি স্বাধীনতা থাকে?

অনম বিশ্বাস: স্বাধীনতা থাকে পুরোপুরি। কারণ ভিজুয়্যালি তো পরিচালক নিজেই ঠিক করছেন যে ক্যারেক্টার, স্পেস এবং ঘটনাপ্রবাহ কেমন হবে। হুমায়ূন আহমেদের 'দেবী' নিয়ে কাজ করার সময় একজন হুমায়ূনভক্ত বললেন যে, মিসির আলীর দাড়ি না থাকলে দর্শকরা প্রেসক্লাবে সমাবেশ করবেন আমাদের বিরুদ্ধে। এই কথা শুনে আমি টেনশনে পড়ে গেলাম। কারণ আমাদের মিসির আলী চঞ্চল ভাইয়ের দাড়ির ঘনত্ব যতখানি, তাতে সেটাকে অনেকে হয়তো মিসির আলীর দাড়ি বলে নাও মেনে নিতে পারেন। যাই হোক, তারপর আমরা অভিনেতার যতটুকু দাড়ি আছে সেটাতেই থাকলাম। নকল দাড়ি পরানো হলো না এমন একটা ফিলিং থেকে যে, মিসির আলী মেক্আপ না নিক, সে যা তাই-ই।

বইতে মিসির আলী থাকেন কাঁঠালবাগান ঢালে আর আমাদের মিসিরকে সেট করা হলো বেগুনবাড়ি বস্তিতে একটা বাঁশ-কাঠের বাসার ভেতর। তো তার মানে ভিজুয়্যালি তো বইকে ইন্টারপ্রেট করার পুরো স্বাধীনতাই থাকে। কিন্তু ঘটনাগুলো বা নতুন ঘটনায় সংলাপ লেখার সময় সেনসিটিভলি করা দরকার। এমন কিছু করা ঠিক না, যাতে মনে হয় এই বই এ্যাডপ্ট না করে একবারে নতুন কিছু ভাবলেও তো হতো। তো ঘটনার এ্যাডাপটেশান এবং ডায়লগ রাইটিং আমি সেনসিটিভলি করার চেষ্টা করি। নিজে হুমায়ূন আহমেদ ভক্ত, তাই তার স্টাইল কপি করে ডায়লগ লিখতে বা ঘটনা ভাবতে আমার মজা লাগে। আর কিঙ্কর আহসানের রঙিলা কিতাব কীভাবে ডিল করা হয়েছে সেটা দর্শকদের মুখ থেকেই শুনতে চাই। তবে এটাও ঠিক দেবী এবং রঙিলা কিতাব – দুই জায়গাতেই আমরা বই থেকে অনেকটাই বেরিয়ে এসে নিজেদের মতো করে সাজিয়েছি বইয়ের মূল অনুভূতিটা ঠিক রেখে। প্রদীপ আর সুপ্তির ঘটনা মূল উপন্যাসে একটা সাব প্লট, আমাদের ওয়েব সিরিজে ওদের জার্নিটাই মূল গল্প।

নির্মাতা হিসেবে কতটা কাছাকাছি গেলেন রঙিলা কিতাব কন্টেন্টের?

অনম বিশ্বাস: রঙিলা কিতাবের নির্মাতা কেমন সেটা দর্শকরা বলতে পারবেন অন্য কাজের সঙ্গে মিলিয়ে। একজন ডিরেক্টর যখন কোনো গল্প নিয়ে কাজ করতে আরম্ভ করেন, তখন গল্পটা আস্তে আস্তে তার হয়ে ওঠে। কীভাবে? তার জীবনের অভিজ্ঞতা এবং কল্পনাগুলোই ধীরে ধীরে গল্পের চরিত্র আর ঘটনাগুলোর ভেতরে প্রবেশ করতে থাকে এবং ভাইরাসের মতো করে ছড়িয়ে যেতে থাকে গল্পের অণু-পরমাণুতে। আস্তে আস্তে গল্পটা ব্যক্তিগত না হলেও কোনো একজন ব্যক্তির পার্সপেক্টিভে পরিণত হয়। ডিরেক্টরের শরীরে যদি গল্পের ইমোশন তৈরি না হয় তাহলে সেটা অন্যদের ভেতর কীভাবে ছড়াবে?

পরীমনি-ইমরানের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

অনম বিশ্বাস: তারা দুইজনই খুব ট্যালেন্টেড। তাদের কেমিস্ট্রিটা সেটেও উপভোগ করা গেছে। তাই আশা করা যায় স্ক্রিনেও সেটা দেখা যাবে। তারা মানসিকভাবে তাদের ক্যারেক্টারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছেন এবং প্রিপারেশন নিয়েছেন। পরীমনি তার ওজন বাড়িয়েছেন, ইমরান ডায়লগুলোর ভেতর কিছুটা লোকাল টোন এনেছেন।

পরিচালনার পাশাপাশি আপনি গান লিখে থাকেন। আপনার লেখা 'টেকা পাখি' গানটা শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছিল। নিয়মিত কি গান লেখার ইচ্ছে আছে?

অনম বিশ্বাস: আছে, আবার নেই। নিজের কনটেন্টের জন্য গান লিখলে ভালোই লাগে। আর আগে নিজে গান লিখে সুর করতাম, ওইটা বহুদিন করা হয় না। ওটা মিস করি।

দেবী সিনেমার পর দীর্ঘদিন আপনার নতুন কোনো সিনেমা বড় পর্দায় আসছে না। সিনেমা পরিচালক হিসেবে কবে বড় পর্দায় ফিরছেন?

অনম বিশ্বাস:  ২০২৫ সালে আমার পরিচালিত নতুন সিনেমা 'ঠিকানা বাংলাদেশ' মুক্তি পাবে, যার ওয়ার্ক টাইটেল ছিল ফুটবল ৭১। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে সিনেমাটি নিয়ে গবেষণা করে চিত্রনাট্য করেছি। শুটিংও হয়ে গেছে। সিনেমাটিতে আরিফিন শুভ-নুসরাত ফারিয়াসহ অনেকেই অভিনয় করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

What does Trump 2.0 mean for businesses in Bangladesh?

For local business communities, Donald Trump’s victory in the presidential race has been shorthand for the expectation that Western apparel orders and some foreign investments would shift to Bangladesh, with global fashion powerhouse China possibly facing higher import tariffs from the US.

9h ago