১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জিতল বাংলাদেশ

ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

জাকের আলি অনিকের স্মরণীয় ইনিংসের পর তাইজুল ইসলাম জ্বলে উঠলেন। অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনারকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন তিন পেসার। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও দুর্দান্ত বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুইশর নিচে গুঁড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। ঘুরে দাঁড়িয়ে জ্যামাইকা টেস্ট জিতে দুই ম্যাচের সিরিজে সমতা টানল তারা।

মঙ্গলবার কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে ম্যাচের চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে ১০১ রানে জিতেছে টাইগাররা। জাকেরের আক্রমণাত্মক ৯১ রানে চড়ে মধ্যাহ্ন বিরতির আগে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬৮ করে থামে তারা। এর আগে থেকে ১৮ রানে পিছিয়ে থাকা ক্যারিবিয়ানরা তাই পায় ২৮৭ রানের লক্ষ্য। তাইজুলের ঘূর্ণিতে নাজেহাল হয়ে দুই সেশনের মধ্যে তারা অলআউট হয় ১৮৫ রানে।

ক্যারিবিয়ানদের মাটিতে অতীতে দুটি টেস্ট জেতার সুখস্মৃতি ছিল বাংলাদেশের। ২০০৯ সালের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল তারা। তবে ১৫ বছর আগের সেই দল ছিল প্রথম সারির তারকাদের ছাড়া সাজানো। এবার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের নেতৃত্বাধীন পূর্ণশক্তির উইন্ডিজের বিপক্ষে জিতে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটানোর পাশাপাশি ১-১ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ ড্র করেছে সফরকারীরা।

ম্যাচসেরা তাইজুল দ্বিতীয় ইনিংসে টানা নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৫ উইকেট নেন ৫০ রান খরচায়। টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেটের স্বাদ পান তিনি। সব মিলিয়ে এই টেস্টে ৭৪ রান খরচায় তার শিকার ৬ উইকেট। সিরিজসেরার পুরস্কার জেডেন সিলসের সঙ্গে ভাগাভাগি করেন তাসকিন আহমেদ। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে প্রথম জয়ের স্বাদ নেন বাংলাদেশের মেহেদী হাসান মিরাজ।

চা বিরতির পর ৪ উইকেটে ১৩৩ রান নিয়ে খেলতে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাকি ৬ উইকেট তারা হারায় ৫২ রানে। তাইজুলের পাশাপাশি তাসকিন, হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা করেন উইকেটের উল্লাস।

এক প্রান্ত ধরে রেখে কাভেম হজ খেলছিলেন আস্থার সঙ্গে। সেই সঙ্গে সুযোগ পেলেই বাউন্ডারি মেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান বাড়াচ্ছিলেন। বাংলাদেশের পথের কাঁটা হয়ে ওঠা ক্যারিবিয়ান ব্যাটারকে থামতে হয় ফিফটি করে। টানা দারুণ বল করতে থাকা তাইজুলের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে কাটা পড়েন তিনি। রিভিউ নিলেও কাজ হয়নি। ৭৫ বলে ছয়টি চারে ৫৫ রান করেন এলবিডব্লিউ হওয়া হজ।

৭২ বলে ৩৭ রানের জুটি ভাঙার পর বাংলাদেশ চাপ বাড়ায়। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে প্রতিপক্ষের। তাইজুলকে সরিয়ে তাসকিনকে বোলিংয়ে আনেন মিরাজ। আক্রমণে ফিরেই সফলতার মুখ দেখেন ডানহাতি পেসার। কিছুটা নিচু হওয়া বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন জাস্টিন গ্রিভস। ৪৫ বলে ২০ রানে আউট হন তিনি। তাসকিনের পরিবর্তে আক্রমণে ফিরেই জোড়া 

জশুয়া ডা সিলভাকে বিদায় করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন তাইজুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং লাইনআপের শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হজের মতো একইভাবে পড়েন এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে। তিনিও রিভিউ নষ্ট করেন। তার ব্যাট থেকে আসে ১৮ বলে ১২ রান।

বাংলাদেশের জয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারেন পেসাররা। তাসকিনের পরিবর্তে আক্রমণে ফিরে একই ওভারে জোড়া শিকার ধরেন হাসান। বড় শট খেলার চেষ্টায় গড়বড় করে বোল্ড হন আলজারি জোসেফ। তিন বল পর কেমার রোচ হন এলবিডব্লিউ। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া গতিময় পেসার নাহিদ ইতি টানেন ম্যাচের। তার ইয়র্কারে এলোমেলো হয়ে যায় শামার জোসেফের স্টাম্প।

এই সংস্করণে দেশের বাইরে বাংলাদেশের সেরা সাফল‍্য এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজে। সব মিলিয়ে ক্যরিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে সফরে গিয়ে তিনটি টেস্ট জিতল তারা।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

1h ago