৩০০ টাকা বাঁচাতে ৩ দিন টিসিবির লাইনে

ছবি: স্টার

রাজধানীর পূর্ব শেওড়াপাড়ায় টিসিবি অনুমোদিত ডিলার হাবিবা এন্টারপ্রাইজের সামনে গত রোববার রাত ১১টার দিকে দেখা যায়, শতাধিক মানুষের ভিড়।

ওই এলাকার বাসিন্দা আলেয়া বেগম (৩০) সেদিন বিকেল ৫টা থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। টিসিবির ৪৮০ টাকা প্যাকেজের পণ্য নিতে ছয় ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছেন।

ওই প্যাকেজে তিনি পাবেন পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি ডাল ও দুই লিটার সয়াবিন তেল, যা বাজার থেকে কিনতে গেলে খরচ হবে ৭৮০-৮০০ টাকা।

জানতে চাইলে আলেয়া বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত শুক্রবার থেকে অপেক্ষা করছি টিসিবির এই পণ্য নেওয়ার জন্য। সেদিন দুপুর ২টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে রাত ৮টায় টোকেন পেয়েছি, টোকেন নম্বর ছিল ৩৬৩, বলেছিল শনিবার মাল পাওয়া যাবে।'

'শনিবার সন্ধ্যার দিকে যখন পণ্য সরবরাহ শুরু হয়, তখন থেকেই লাইনে। সেদিন দুই-তিন ঘণ্টার মধ্যে চাল শেষ হয়ে যায়। তাই ওইদিন আর মাল নেওয়া হয়নি। পরে আজ (রোববার) বিকেল থেকে লাইনে। কিন্তু চাল দেওয়া শুরু হয় সন্ধ্যার পর। এখন রাত ১১টা পর্যন্ত চাল-ডালের অপেক্ষায়,' বলছিলেন তিনি।

আলেয়ার স্বামী পেশায় দিনমজুর, তিনি নিজে গৃহিণী। ঘরে ছোট দুই সন্তান। চারজনের অভাবের সংসারের জন্য টিসিবির পণ্য কিনে ৩০০ টাকা সাশ্রয় করা খুব প্রয়োজন বলে মনে করেন আলেয়া।

তার মতো টিসিবির পণ্য নিতে আসা আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলছেন, টিসিবির এই সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য পাওয়াটা তাদের জন্য আশীর্বাদ। কিন্তু এর জন্য যতটা সময় অপেক্ষা করতে হয়, তাদের মতো দিনমজুরদের কাছে এই সময়ের মূল্য অনেক।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে হাবিবা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. হাসান জোমাদ্দার। রোববার রাতে যখন তারা পণ্য সরবরাহ করছিলেন, সেখানে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার পরিচয় দেন মো. সোহেল।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রতি মাসে আমরা ৭০০ পরিবারকে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য দিতে পারি। যাদের টিসিবির নির্ধারিত ফ্যামিলি কার্ড আছে, তারাই এই পণ্য নিতে পারবে। সবাইকে যেহেতু আমরা পণ্য দিতে পারি না, তাই আমরা টোকেনের ব্যবস্থা করেছি।'

পণ্য নিতে কেন একজনকে তিনদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমাদের এখানে পণ্য নিতে অনেকে আসেন, যাদের সবাইকে দেওয়ার মতো মালামাল আমাদের থাকে না। ৭০০ জনের জন্য আমরা টোকেনের ব্যবস্থা করেছি। তাই টোকেন দিতে একদিন লেগে যায়।'

'শনিবার যখন পণ্য দেওয়া শুরু করি, তখন ৭০০ জনের চাল ছিল না। সেদিন সন্ধ্যার পর মাল দেওয়া বন্ধ করে দিতে হয়। রোববার চাল আসার পর সন্ধ্যায় পণ্য দিতে শুরু করি। এসব কারণে সময় বেশি লেগে যায়,' বলেন সোহেল।

আলেয়া রোববার রাত ১১টার দিকে জানিয়েছিলেন যে, টোকেন নম্বর অনুযায়ী তার আগে তখনো অনেকে ছিলেন। রাত ১২টার পর তিনি সাশ্রয়ী মূল্যে চাল-ডাল-তেল নিয়ে বাসায় ফিতে পারবেন বলে আশা করছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
Unhealthy election controversy must be resolved

Unhealthy election controversy must be resolved

Just as the fundamental reforms are necessary for the country, so is an elected government.

10h ago