ব্যস্ত সড়কের মাঝখানে ডাস্টবিন

দুর্গন্ধের পাশাপাশি রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনার কারণে আবাসিক এলাকা দুটোতে বসবাসরত মানুষ ও এ এলাকা দিয়ে চলাচলকারীরা ভোগান্তিতে পড়েন। ছবি: স্টার

বন্দর নগরীর দুটি আবাসিক এলাকা সংলগ্ন ব্যস্ত সড়কের মাঝখানে ময়লা ফেলার শেডটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে কয়েক মাস ধরে জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) প্রায় দুই বছর আগে চকবাজার থেকে মুরাদপুর সড়কের কাতালগঞ্জ এলাকায় 'কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা'র জন্য এই অস্থায়ী বর্জ্য শেড স্থাপন করে।

স্থানীয়রা জানান, এটি স্থাপনের পর থেকে ময়লা ফেলার শেডটি উল্টো জনসাধারণের জন্য উপদ্রব সৃষ্টি করছে।

আবর্জনা শেড সংলগ্ন রাস্তার দুপাশে দুটি আবাসিক এলাকা রয়েছে। কাতালগঞ্জ আবাসিক এলাকা ডান পাশে আর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকা রাস্তার বাম পাশে। এই রাস্তাটির ধারে বেশ কয়েকটি স্কুল, প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। দুর্গন্ধের পাশাপাশি রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লা-আবর্জনার কারণে আবাসিক এলাকা দুটোতে বসবাসরত মানুষ ও এ এলাকা দিয়ে চলাচলকারীরা ভোগান্তিতে পড়েন।

রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার মাঝখানে খোলা ডাস্টবিন থাকায় পথচারী ও রিকশার যাত্রীরা নাকে হাত দিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ করে এই স্থানটুকু অতিক্রম করছেন।

রাস্তাটি ধরে রিকশাযোগে বাড়ি ফিরছিল পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার রাজশ্রী দত্ত ও জান্নাতুন নাঈম। তারা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। রিকশাটি ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধে তাদের দুজনেরই নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। চসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীরা ডাস্টবিন থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করার সময় বর্জ্য থেকে ছিটে আসা নোংরা পানি পোশাকে লাগায় দুই শিক্ষার্থী অসহায় বোধ করছিল।

দ্য ডেইলি স্টারকে জান্নাতুন বলে, 'স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় প্রতিনিয়ত এই দুর্ভোগে পড়তে হয়। রাস্তায় ডাস্টবিন থাকায় বছরের পর বছর ধরে আমাদের দুর্ভোগ হলেও এটি সরানো হয় না।'

কাতালগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সুভাষ বড়ুয়াও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'একটি সভ্য দেশের ব্যস্ত রাস্তার মাঝখানে এভাবে ডাস্টবিন রাখা যেতে পারে? জনদুর্ভোগ কমানোর বদলে চসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগ উল্টো উপদ্রব তৈরি করছে।'

পাঁচলাইশ এলাকার আরেক স্থানীয় আব্দুল আজিজ বলেন, '২০১৭ সালের মার্চের মধ্যে শহর থেকে সব খোলা ডাস্টবিন ও ময়লা ফেলার শেড অপসারণ করার ঘোষণা দিয়েছিল চসিক। অথচ, ব্যস্ত রাস্তার মাঝখানে এই খোলা ডাস্টবিন আমাদের কষ্টের কারণ।'

চসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি শহর থেকে ডাস্টবিন অপসারণ শুরু করার আগ পর্যন্ত নগরীতে মোট এক হাজার ৩৫০টি খোলা ডাস্টবিন ও ৯৬টি কনটেইনার ডাস্টবিন ছিল। সে সময় প্রতিটি ঘর থেকে বর্জ্য সংগ্রহের ঘোষণা দেয় চসিক।

একটি পরিচ্ছন্ন নগরী করার লক্ষ্যে চসিক ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি প্রতিটি ঘর থেকে বর্জ্য সংগ্রহ শুরু করে। এ লক্ষ্যে চসিক প্রায় নয় লাখ বিন সরবরাহ করেছে বাসা, দোকান, হাট-বাজার, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে।

তবে এই উদ্যোগের সাত বছর পরও অনেক ডাস্টবিন রাস্তায় পড়ে আছে।

বিষয়টি স্বীকার করে চসিকের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা বলেন, 'শহর থেকে সব ডাস্টবিন সরানোর কথা থাকলেও কিছু এখনও রয়ে গেছে। কিছু বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান বর্জ্য সংগ্রহের আওতার বাইরে থেকে যায়। তাই আমরা এই ডাস্টবিনগুলো স্থাপন করেছি। আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ডাস্টবিনগুলো থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে ল্যান্ডফিলে ফেলে আসে।'

কাতালগঞ্জ এলাকায় ব্যস্ত সড়কের মাঝখানে কেন ডাস্টবিন বসানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ডাস্টবিন স্থাপনের জন্য ওই এলাকায় আর কোনো জায়গা পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা ডাস্টবিন স্থাপনের জন্য জমি ছাড়তে চান না। আমরা কী করব? কোনো বিকল্প না পেয়ে রাস্তার পাশে ডাস্টবিন বসাতে বাধ্য হয়েছি।'

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

3h ago