ইসরায়েল-মিশরে সামরিক এবং জরুরি খাদ্য ছাড়া বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সব সহায়তা স্থগিত

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছে এবং নতুন সাহায্যের জন্য অনুমোদন দেওয়া বন্ধ রেখেছে।

আজ শনিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাঁস হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। নথিটি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা ও বিদেশি দূতাবাসগুলোতে পাঠানো হয়েছে।

গত সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশ দেওয়ার পর বিদেশি সহযোগিতা বন্ধের বিষয়টি সামনে আসে।

ফাঁস হওয়া নথি অনুযায়ী, আগামী ৯০ দিনের জন্য সব মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষিত বৈদেশিক নীতি পর্যালোচনার পর এসব সহায়তার বিষয়ে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং ৮৫ দিনের মধ্যে এই পর্যালোচনা শেষ করা হবে।

দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য ৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।

নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে উন্নয়ন সহায়তা থেকে শুরু করে সামরিক সাহায্য পর্যন্ত সবকিছুতেই প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে নথি অনুযায়ী, জরুরি খাদ্য এবং ইসরায়েল ও মিশরের জন্য সামরিক সহায়তার অব্যাহত থাকবে। অর্থাৎ গাজা ও সুদানসহ অন্যান্য যেসব জায়গায় খাদ্য সংকট চলছে, সেখানে জরুরি খাদ্য সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

নথিতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট মার্কিন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, 'পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো নতুন তহবিল অনুমোদিত হবে না বা বিদ্যমান কোনো চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে না', এমনকি পর্যালোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলমান প্রকল্পের কাজও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, 'বিদেশে আমাদের ব্যয় শুধু সেখানেই হওয়া উচিত, যেটি আমেরিকাকে নিরাপদ, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করে।'

এই সিদ্ধান্ত বিদেশি সাহায্য কর্মসূচির ওপর অনেক বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক এক সিনিয়র কর্মকর্তা।

২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত অস্ত্র সরবরাহে কংগ্রেসের সম্পর্ক দেখভালকারী জশ পল বিবিসিকে বলেন, 'বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ার কথাটি একবার ভাবুন। এটি অনেক বড় একটি বিষয়।'

মধ্যপ্রাচ্যে ইউএসএইড মিশনের সাবেক পরিচালক ডেভ হার্ডেন বিবিসিকে বলেন, এটা 'অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ' সিদ্ধান্ত, যার কারণে বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে মানবিক ও উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এই অর্থায়ন বন্ধের প্রভাব পড়তে পারে ইউক্রেনেও। সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন দেশটিতে কয়েক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সহযোগিতা দিয়েছে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত এসেছে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশে। ক্ষমতা নেওয়ার পরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্প ১০০টিরও বেশি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Child rape cases rise nearly 75% in 7 months

Shows ASK data; experts call for stronger laws, protection

1h ago