৩ মাসে ইস্পাত-সিমেন্ট প্রতিষ্ঠানের মুনাফা কমেছে

পুঁজিবাজার
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

চলতি অর্থবছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইস্পাত ও সিমেন্ট উৎপাদনকারীদের মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক কমেছে।

মূলত কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে অবকাঠামো প্রকল্পগুলোয় সরকারি খরচ কমে যাওয়ায় এমনটি হয়েছে।

তালিকাভুক্ত রড, সিমেন্ট ও সিরামিক উৎপাদনকারী আট শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কেবল বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের মুনাফা বেড়েছে।

রড তৈরির প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেড, বিএসআরএম লিমিটেড ও জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের মুনাফা কমেছে।

সিমেন্ট উৎপাদকদের মধ্যে ক্রাউন সিমেন্ট ও প্রিমিয়ার সিমেন্টের মুনাফা কমেছে। অন্যদিকে, মেঘনা সিমেন্টের লোকসান হয়েছে।

এই তিন মাসে আরএকে সিরামিকসের মুনাফা কমেছে।

জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিক্রি বেশি হওয়া সত্ত্বেও যেহেতু পরিচালন খরচ বেড়েছে তাই মুনাফা কম।'

তিনি জানান, বিশেষ করে ব্যাংকিং খাত সুদের হার বাড়ানোয় আর্থিক খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা কমেছে। পাশাপাশি শ্রমিক খরচও বেড়েছে।

চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিক্রি আগের পর্যায়ে ফিরলেও প্রথম প্রান্তিকে দেশব্যাপী রাজনৈতিক আন্দোলন ও সরকারি খরচের ধীরগতির কারণে সেই প্রান্তিকের বিক্রির ওপর এর প্রভাব পড়ে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের মুনাফা ২৯ শতাংশ কমে হয়েছে ২৪ কোটি টাকা।

তিন মাসের ব্যবধানে বিএসআরএম লিমিটেড ও বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেডের মুনাফা কমেছে যথাক্রমে ৪০ শতাংশ ও ১৬ শতাংশ।

যেহেতু নির্মাণশিল্পে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রচুর বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়, তাই সুদের হার বাড়লে তাদের মুনাফায় প্রভাব পড়ে বলে জানিয়েছেন শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউসের এক বিশ্লেষক।

তিন রড প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত ব্যাংক ঋণ ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। ফলে তাদের নিট অর্থায়ন খরচ প্রায় আট শতাংশ বেড়ে ৩০২ কোটি টাকা হয়েছে।

এ দিকে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ক্রাউন সিমেন্টের মুনাফা অর্ধেক হয়ে ১৮ কোটি টাকা হয়েছে। যদিও এর বিক্রি ১২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৯২০ কোটি টাকা।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষ নির্মাণ খাতে খরচ কমিয়েছেন। নির্মাণ সম্পর্কিত পণ্য উত্পাদকদের বিক্রিতে প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন অপর বিশ্লেষক।

ক্রাউন সিমেন্ট জানিয়েছে, এর সক্ষমতা বাড়াতে ঋণ নেওয়া হয়। ঋণের সুদের কারণে মুনাফা কমেছে।

বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞাপন ও জনশক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোয় খরচ বেড়েছে।

প্রিমিয়ার সিমেন্টের মুনাফা ৯০ শতাংশ কমে দুই কোটি টাকা হলেও মেঘনা সিমেন্টের লোকসান হয়েছে ২৯ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে মেঘনার মুনাফা হয়েছিল ৯৪ লাখ টাকা।

মেঘনা সিমেন্ট মিলস জানিয়েছে, ডলার সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বেশ কয়েকদিন সাধারণ ছুটি থাকায় তারা সময়মতো এলসি খুলতে পারেনি।

এলসি খোলার চেষ্টা করলে ব্যাংকগুলো ১২০ শতাংশ মার্জিন দাবি করে। অর্থাৎ কাঁচামাল আমদানির জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে প্রচুর পরিমাণে টাকা অগ্রিম দিতে হয়।

একই সময়ে সুদের হার নয় শতাংশ থেকে বেড়ে সাড়ে ১৪ শতাংশ হওয়ায় কাঁচামালের দাম অনেক বেড়ে যায়। ফলে কমে যায় মুনাফা।

এ সময়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানটির নগদ অর্থপ্রবাহে প্রভাব পড়েছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শুধু বার্জার পেইন্টসের মুনাফা বেড়ে ৮৮ কোটি টাকা হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে তা ছিল ৭৯ কোটি টাকা।

এ দিকে, আরএকে সিরামিকের মুনাফা আগের বছরের একই প্রান্তিকের ২১ কোটি টাকা থেকে কমে হয়েছে নয় কোটি টাকা।

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

2h ago