নোয়াখালীতে ওবায়দুল কাদেরের বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে বসুরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বড় রাজাপুর মহল্লার ওই বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

এসময় ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা ও শাহাদাত মির্জার দ্বিতল ভবন, টিনশেড ঘর ও টিনের রান্নাঘর ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া বাড়ির সামনে থাকা পানির ট্যাংক ও একটি পরিত্যক্ত গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ছবি: স্টার

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ৪০০-৫০০ জনের একটি দল দুই ঘণ্টাব্যাপী ভাঙচুর চালায়। তবে সেসময় বাড়িতে কেউ ছিলেন না। 

এর আগে, গত ৫ আগস্ট ওবায়দুল কাদের ও আব্দুল কাদের মির্জার বাসভবনে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। 

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ঘোষণা দিয়ে আজ সকাল ১১টা থেকে ওবায়দুল কাদেরের বাড়ির সামনে বসুরহাট-দাগনভূইয়া সড়কের ওপর জড়ো হতে থাকেন। 

এসময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতাকে ওবায়দুল কাদের ও আব্দুল কাদের মির্জা এবং স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা যায়।

বাড়ির সামনে থাকা পানির ট্যাংক ও একটি পরিত্যক্ত গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ছবি: স্টার

দুপুর আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে ভিড় করেন স্থানীয় উৎসুক জনতা। এসময় তাদের মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে দেখা যায়।
 
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলার সমন্বয়ক আরিফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আওয়ামী লীগ, ওবায়দুল কাদের ও তার ভাই আব্দুল কাদের মির্জার দুঃশাসনের ফলে আজ তারা নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ বাড়ি থেকেই কোম্পানীগঞ্জ তথা নোয়াখালী নিয়ন্ত্রিত হত, ওবায়দুল কাদের ও তার ভাই মির্জা কাদের রাজনৈতিক অপকর্ম করতেন।'

তিনি আরও বলেন, '৫ আগস্টের আগে সারাদেশে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও উস্কানিমূলক বক্তব্যের জন্য ওবায়দুল কাদের দায়ী। এছাড়া নোয়াখালী ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার অসংখ্য মানুষ ওবায়দুল কাদের, আব্দুল কাদের মির্জা এবং তাদের লোকজনের দ্বারা অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আজ সেই রাগ ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে ছাত্র-জনতা। ভবিষ্যতে ওবায়দুল কাদেরের মতো কেউ ঘৃণিত রাজনীতি করলে তার পরিণতিও এমনটাই হবে।'

বসুরহাট পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বড় রাজাপুর মহল্লার ওই বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ছবি: স্টার

এ বিষয়ে বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ও বসুরহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল মতিন লিটন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে ভাঙচুরের বিষয়টি দুঃখজনক। গত ৫ আগস্টের পর একবার ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর হয়েছে। বিএনপি এ ধরনের প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।'

এ হামলার সঙ্গে বিএনপি কিংবা এর সহযোগী সংগঠনের কেউ জড়িত নয় বলেও দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী নোয়াখালী জেলা শাখার সাবেক আমির ডা. বোরহান উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জামায়াতে ইসলামী কিংবা ইসলামী ছাত্রশিবির কোনো ধ্বংসাত্মক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।'

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফৌজুল আজিম ও নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল্লাহ আল ফারুকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা সাড়া দেননি।

তবে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খবর শুনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

8h ago