সরকারে বসে, সুযোগ সুবিধা নিয়ে দল গঠন করবেন সেটা মেনে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্টার ফাইল ফটো

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ অতিদ্রুত যেন একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফিরে যেতে পারে সেটিই চায়। কিন্তু সাত মাসেও আমরা সেই জায়গায় যেতে পারিনি।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ, সদস্য নবায়ন ও গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে নতুন ধারার ছাত্ররাজনীতি শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকার চেষ্টা করছে কিছু কাজ শেষ করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের। কিন্তু এর মধ্যেই কিছু সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে মানুষের মধ্যে। সেই সন্দেহটা হচ্ছে আদৌ তারা (সরকার) নির্বাচন নিয়ে আন্তরিক কিনা।'

তিনি বলেন, 'কারণ আছে এই সন্দেহ তৈরি হওয়ার। গতকাল খবরে দেখেছেন আপনারা যে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেছেন -ফ্যাসিস্টের লোকেরা যদি কেউ মাফ চেয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় তাহলে তারা পারবে। এটা কি আপনারা মেনে নেবেন? এর থেকে এখন এটাই প্রমাণিত হয়েছে তারা এখন তাদের নিজেদের স্বার্থে ওই ফ্যাসিস্টদের জায়গা দিতে চায়।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা গতকাল এ কথাটা বলেছেন, অনেকেই হয়ত তার বক্তব্যটি খেয়াল করেননি৷'

'তার মানে কি আমরা এটা মনে করব তারা সরকারে থেকে তাদের দল গোছানোর জন্য, তারা বিভিন্ন রকম কৌশল নিচ্ছেন। সেই কৌশল নিলে আমরা তা হতে দেব না। এদেশের মানুষ তা হতে দেবে না।'

ফখরুল জানান, যেকোন রাজনৈতিক দলকে আমরা স্বাগত জানাব। ইতোমধ্যে নতুন গঠিত ছাত্র সংগঠনকে তিনি স্বাগত জানান। যখন রাজনৈতিক দল গঠন হবে তখনও তিনি স্বাগত জানাবেন।

'তার অর্থ এই নয় আপনারা সরকারে বসে, সরকারের সুযোগ সুবিধা নিয়ে আপনারা আপনাদের দল গঠন করবেন। সেটা কখনই মেনে নেওয়া হবে না।'

অন্তবর্তীকালীন সরকার ও সরকার প্রধানকে উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, 'অবিলম্বে এ বিষয়গুলোতে ব্যবস্থা নিন। তা না হলে আপনাদের প্রতি জনগণের যে আস্থা আছে, সেই আস্থাও থাকবে না।'

ফখরুল বলেন, 'আমি যখন প্রথম বলেছিলাম যদি এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের কেউ নিরপেক্ষতা হারায় তাহলে আরেকটি নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে- কেন বলেছিলাম তা এখন প্রমাণ হচ্ছে। তখন তিনি বলেছিলেন, আমি নাকি এক এগারোর দিকে নজর দিচ্ছি। আমরা এক এগারোর ভুক্তভোগী। এক এগারো যারা তৈরি করেছিল তারা টিকতে পারেনি মানুষের কাছে।"

'আবারও হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই, যদি আবার কেউ এক এগারোর কথা চিন্তা করেন, গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়ে একদলীয় শাসন বা ফ্যাসিস্ট সরকারের দিকে যেতে চান তাহলে জনগণ কখনই এটি মেনে নেবে না।'

তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে ও দেশ নির্মাণে বিশাল ভূমিকা পালন করেছে ছাত্ররাজনীতি।

'এই আন্দোলনে ছাত্রদলের ভূমিকা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কারণ প্রথম থেকেই আমরা যখন এই আন্দোলন শুরু করি ১৫ বছর আগে থেকে, তখন থেকেই ছাত্রদল তাদের ভূমিকা রাখছে। এই আন্দোলনে শুধু ৩৬ দিনে ফ্যাসিস্টকে সরানো যায়নি। ১৫ বছরের আন্দোলনে, ত্যাগে, রক্ত দিয়ে, ফ্যাসিস্ট বাধ্য হয়েছে সরে যেতে। অবশ্যই ৩৬ দিন ছিল চূড়ান্ত আন্দোলনের শেষ পর্যায়, সেখানে নিঃসন্দেহে আমাদের ছেলেরা অবদান রেখেছে। আমরা আমাদের একটি হিসাবে দেখেছি প্রায় ২ হাজার ছেলে শহীদ হয়েছে, এরমধ্যে ছাত্রদলের আছে ৮০০। আমার নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওতে ৯ জন শহীদ হয়েছেন, তারমধ্যে ৭ জনই হচ্ছেন ছাত্রদলের।'

'তাই যারা বলেন ছাত্রদলের কোনো ভূমিকা ছিল না, বিএনপির কোনো ভূমিকা ছিল না, আমার মনে হয় তাদের সঠিকভাবে উপলব্ধি করা দরকার, তথ্যগুলো নেওয়া দরকার, তারপর কথা বললে ভালো হয়।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আজকে অত্যন্ত ক্রান্তিকালে আমরা বাস করছি। একটি ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে আমরা এখন গণতান্ত্রিক শাসনে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে আছি।'

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

8h ago