সালমান এফ রহমানের ৩৫৮ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের ৩৫৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ নির্দেশ দেন।
তদন্ত দলের প্রধান দুদকের উপপরিচালক মো. জয়নাল আবেদিন এই আবেদন করেন। দুদকের হয়ে আদালতে আবেদনটি উপস্থাপন করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রেজাউল করিম রেজা।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, সালমান এফ রহমান ও তার সহযোগীরা প্লেসমেন্ট শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে শেয়ার হোল্ডারদের কাছ থেকে হাজারো কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংককে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার এবং হাজারো কোটি টাকা বিদেশে পাচার করার অভিযোগও রয়েছে।
তদন্ত চলাকালে সালমান, তার পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের অনেকগুলো ব্যাংক হিসাব শনাক্ত করা হয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে দুদক কর্মকর্তা আরও বলেন, সালমান ও তার সহযোগীরা এসব ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ হস্তান্তর বা স্থানান্তর করার চেষ্টা করছেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, 'যদি তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হয়, তাহলে তদন্ত শেষে মামলা দায়ের, আদালতে চার্জশিট দাখিল, বিচার কার্যক্রম পরিচালনা এবং সরকারের পক্ষে অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার মতো কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে।'
এর আগে গত আগস্টে সালমান, তার স্ত্রী ও ছেলের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার জন্য সব ব্যাংককে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অর্থ পাচার মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে সালমান ও তার পরিবারের সদস্যদের ২৫০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ জব্দ করে।
গত বছরের ২২ আগস্ট দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও ব্যাংক খাতের অনিয়মের অভিযোগে সালমানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক।
সাবেক সংসদ সদস্য ও শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে গত ১৩ আগস্ট সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন।
সিআইডি জানায়, সালমানের জব্দ করা সম্পত্তির মধ্যে আছে দোহার উপজেলার প্রায় দুই একর জমি এবং গুলশানে সালমান-পুত্র ও মামলার অন্যতম আসামি আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের নামে থাকা ছয় হাজার ১৮৯ বর্গফুটের একটি অ্যাপার্টমেন্ট। এর বাইরে, গুলশানের ছয়তলা ট্রিপলেট ভবনে দুই হাজার ৭১৩ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাটও জব্দ করা হয়েছে।
সিআইডির সূত্র অনুযায়ী, সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহতে অবস্থিত শাহরিয়ার রহমানের সংস্থা পিআর গ্লোবাল ট্রেডিং এফজেডইতে দুই কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে সালমান অর্থ পাচার করেছেন।
Comments