৪ দিনের সফরে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

চীনের উদ্দেশে ফ্লাইটে ওঠার আগে বিমানবন্দরে ড. ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সৌজন্যে

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে চীনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, আজ বুধবার দুপুর ১টায় চীনের একটি বিশেষ ফ্লাইটে রওনা হয়েছেন ড. ইউনূস।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন ড. ইউনূস।

চীনের এই বিশেষ উড়োজাহাজে ভ্রমণ করবেন ড. ইউনূস। ছবি: ভিডিও থেকে

২৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) অ্যানুয়াল কনফারেন্সের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগদান করবেন ও ভাষণ দেবেন। পরে প্রধান উপদেষ্টা চীনের স্টেট কাউন্সিলের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ড. ইউনূস ২৯ মার্চ সকালে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং রাতে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা করবেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গত ১৬ মার্চ জানান, এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে অনারারি ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হবে। এছাড়া তিনি চীনের হাইটেক পার্ক পরিদর্শন করবেন।

তিনি আরও জানান, এই সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার।

শফিকুল আলম বলেন, এই সরকার বাংলাদেশকে একটা বৈশ্বিক ম্যানুফেকচারিং হাব (উৎপাদন কেন্দ্র) হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। সে লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার সফরে চীনের কারখানাগুলোকে কীভাবে বাংলাদেশে স্থানান্তর করা যায়, সে বিষয়টি আলোচনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাবে।

প্রেস সচিব বলেন, বিএফএকে বলা হয় প্রাচ্যের দাভোস। এই সম্মেলনে এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় নেতা এবং বড় বড় প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা যোগ দেবেন। আমরা আশা করছি, বিএফএ সম্মেলনের সাইডলাইনে চীনসহ অন্যান্য দেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠক হবে প্রধান উপদেষ্টার।

তিনি জানান, এই সফরে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে মূল ফোকাস থাকবে চীনের কোম্পানিগুলো যেন তাদের কারখানা বাংলাদেশে স্থানান্তর করে। গত বছর জাতিসংঘ সম্মেলনের সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস চীনের নবায়নযোগ্য জ্বালানি কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দিয়ে চীনের দুটি কোম্পানি ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অফিস স্থাপন এবং সোলার এনার্জিতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শফিকুল আলম বলেন, চীনের সোলার কোম্পানি ট্রেড প্রোটেকশনের কারণে অনেক ক্ষেত্রে তাদের বিনিয়োগে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে তারা কোনো বাধার সম্মুখীন হবেন না।

প্রেস সচিব বলেন, আশা করছি এই সফরের পর আরও চীনা কোম্পানি বাংলাদেশে আসবে। চীনের হাসপাতাল চেইন যেন বাংলাদেশে যৌথ বিনিয়োগ করে—সে বিষয়ে আলোচনা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

২০ মার্চ প্রেস সচিব বলেন, 'এটা একটা ঐতিহাসিক সফর হবে। একটা বিষয় হচ্ছে যে চীন আমাদের এখান থেকে তিনটা পণ্য বড় আকারে আমদানি করতে চায় বলে চীনা রাষ্ট্রদূত আমাদের জানিয়েছেন। এগুলো হলো আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা।'

'সেজন্য আমরা আশা করছি যে চীনের সঙ্গে আমাদের একটা নতুন এক্সপোর্টের দিগন্ত উন্মোচিত হবে। বাংলাদেশি আম চীনারা পছন্দ করে এবং তারা কাঁঠালও খুব পছন্দ করেন। কাঁঠালটা খুব বৃহৎ আকারে আমরা এক্সপোর্ট করতে পারব,' বলেন তিনি।

২৩ মার্চ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে কোনো চুক্তি সই হবে না। তবে, বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Chief adviser calls for urgent reforms in social services to prioritise senior citizens, girls

Political interference led to unfair distribution of benefits in the past, he says

1h ago