‘ক্রিকেট খেলার একটি বাংলাদেশি ধরণ খুঁজে বের করতে হবে’

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ব্যাটিং অলরাউন্ডার ফিল সিমন্সের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছে। আগামী ২০২৭ সালে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান কোচ থাকবেন তিনি।

দ্য ডেইলি স্টারের সামসুল আরেফীন খানের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে লম্বা সময়ের জন্য এই দায়িত্ব গ্রহণের পেছনের অনুপ্রেরণা, সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টাইগারদের পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন এবং আসন্ন বছরগুলোতে এই দলকে ঘিরে পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন সিমন্স। চুম্বক অংশ নিচে তুলে ধরা হলো:

দ্য ডেইলি স্টার: চুক্তি নবায়নের আগে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে আপনি ছয় মাস কাজ করেছেন। এই সময়টাকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

ফিল সিমন্স: এটা অসাধারণ। আমার সামনে থাকা খেলোয়াড়দের পাশাপাশি বোর্ড ও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ থেকে আমি যে সমর্থন পেয়েছি, সব কিছুই সত্যিই ভালো ছিল। আমার দিক থেকে চুক্তির মেয়াদ না বাড়ানোর কোনো কারণ ছিল না।

স্টার: অনেক শীর্ষ কোচ এখন কেবল ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেই চাকরি বেছে নিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে আপনার দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির কারণ কী?

সিমন্স: সময়টা অল্প হলেও এই খেলোয়াড়দের সঙ্গে থাকাটা উপভোগ করেছি। তাদের জিততে চাওয়ার, কঠোর পরিশ্রম করার এবং কঠোর অনুশীলন করার মনোভাবের কারণেই আমি আমার চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে চেয়েছিলাম।

স্টার: দীর্ঘদিন ধরে খেলে যাওয়া অনেক সিনিয়র খেলোয়াড় ইতোমধ্যে অবসর নিয়েছেন। তাই নতুন মেয়াদ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে বাকি খেলোয়াড়দের ওপর আরও বেশি নির্ভর করতে হবে। আপনি এটাকে কীভাবে দেখছেন?

সিমন্স: ব্যাপারটা হলো, সিনিয়র খেলোয়াড়রা একসময় না একসময় সরে যাবে। তরুণ খেলোয়াড়রা এসে তাদের জায়গা পূরণ করবে। আমাদের ২০২৭ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবতে হবে। আপনারা আপনাদের দুই সুপরিচিত খেলোয়াড়কে হারিয়েছেন। একজন হলেন মুশফিকুর (রহিম) এবং আরেকজন মাহমুদউল্লাহ। এখন আমাদের দেখতে হবে যে, কারা এই জায়গা পূরণ করবে। যদি আমরা এখন থেকেই শুরু করতে পারি, তাহলে বিকল্প খেলোয়াড়রা শূন্যস্থানগুলোতে তাদের নিজস্ব পরিচয় তৈরি করার সুযোগ পাবে।

স্টার: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? আসলে কী কী ভুল হয়েছিল?

সিমন্স: আমার মনে হয়, আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। এই শিক্ষাটা আমরা নিয়েছি। তাছাড়া, কীভাবে ধারাবাহিকভাবে রান করতে পারি এবং ওয়ানডেতে ১১ থেকে ৩৫ ওভার পর্যন্ত ঝুঁকিমুক্ত হয়ে খেলতে পারি তা নিয়ে কাজ করতে পারি। কারণ, আমরা পাওয়ারপ্লে এবং ডেথ ওভারে ভালো করেছি। কিন্তু আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, আমরা মাঝের ওভারগুলোতেও ভালো করছি। সব শক্তিশালী দল এই দিকটায় সত্যিই ভালো করছে।

স্টার: আপনার নতুন মেয়াদে টাইগাররা দুটি আইসিসি ইভেন্ট খেলবে। একটি ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, আরেকটি ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। সেগুলোকে সামনে রেখে আপনার পরিকল্পনা কী?

সিমন্স: পরিকল্পনা এখন থেকেই শুরু করা উচিত। আমাদের সবকিছু একসঙ্গে করা শুরু করতে হবে। প্রথমে ঠিক করতে হবে আমরা কীভাবে টি-টোয়েন্টি খেলতে চাই সেটা এবং তারপর ৫০ ওভারের ক্রিকেট। টুর্নামেন্ট জেতার জন্য বাংলাদেশ দলের খেলার সেরা ধরণ কী হতে পারে তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। এশিয়া কাপ দিয়ে টি-টোয়েন্টির পরিকল্পনা শুরু হবে। এরপর আমরা মূল্যায়ন করব কোন কোন বিষয়ে পরিবর্তন আনা দরকার। তাই আসলে অনেক কিছু করার আছে।

স্টার: সামনে বাংলাদেশের ব্যস্ত আন্তর্জাতিক সূচি রয়েছে। খেলোয়াড়দের চোটমুক্ত রাখতে তাদেরকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানোর বিষয়ে আপনার মতামত কী?

সিমন্স: ব্যাটিংয়ের দিক থেকে আমার মনে হয়, এটা কঠিন হবে। ব্যাটিংয়ে খুব বেশি অদল-বদলে আমি বিশ্বাস করি না। তবে বোলিংয়ের দিক থেকে আমাদের কাছে প্রচুর সংখ্যক ফাস্ট বোলার আছে, যাদেরকে আমরা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করতে পারি। আমাদের আসলে রোটেশন করতে হবে। কারণ, আমরা আগামী মাসের শেষদিক থেকে চলতি বছরের শেষদিকে বিপিএল পর্যন্ত অনেক ম্যাচ খেলব। আমাদের ফাস্ট বোলারদের অদল-বদল করে খেলাতে হবে, যাতে তারা শারীরিকভাবে পোক্ত থাকে এবং তাদের দক্ষতার উন্নতি হয়।

স্টার: আগামী দিনে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে আপনার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন কী?

সিমন্স: আমরা তিন সংস্করণেই এখন যেমন আছি, তার চেয়ে অনেক ভালো করতে পারব। অনেক তরুণ খেলোয়াড় আছে, যারা তিন সংস্করণেই ভালো করার জন্য ভীষণ ক্ষুধার্ত। আমাদের ক্রিকেট খেলার জন্য একটি বাংলাদেশি ধরণ খুঁজে বের করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Effective tariff for RMG exports to US climbs to 36.5%: BGMEA

The tariff will be a bit less if 20% of the cotton used in garment production is sourced from the USA

2h ago