জবিতে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি, মার্কিন ও সৌদি দূতাবাসে স্মারকলিপি

‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ছবি: স্টার

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধের দাবিতে 'মার্চ ফর প্যালেস্টাইন' কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তারা ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর থেকে একটি গণমিছিল বের হয়। মিছিলটি কোর্ট প্রাঙ্গনের সড়ক হয়ে তাঁতিবাজার মোড় পর্যন্ত যায়। পরে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মিছিল থামিয়ে দেন। সারাদেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলমান থাকায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে পুলিশ মিছিলকারীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করে। পরে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা ক্যাম্পাসে ফিরে যান।

আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর থেকে একটি গণমিছিল বের হয়। ছবি: স্টার

মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ইসরায়েলি বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা বলেন—'তুমি কে আমি কে, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন', 'ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ কর', 'জাতিসংঘ জবাব চাই, ওআইসি জবাব চাই', 'ইসরায়েল নিপাত যাক, ফিলিস্তিন মুক্তি পাক।'

ক্যাম্পাসে ফিরে তারা ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। সেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

সমাবেশ শেষে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসাইনের নেতৃত্বে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

সমাবেশে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ জবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক নূর নবী বলেন, 'মুসলিম বিশ্ব আজ নীরব। অনেক মুসলিম নেতা যেন মোসাদের এজেন্টের মতো কাজ করছেন। আমরা বাংলাদেশ থেকে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই—তোমাদের আমরা বয়কট করলাম। পশ্চিমা নেতারা মুখে মানবতার কথা বলেন, অথচ তারাই ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করছে। এই গণহত্যার দায় তাদেরই নিতে হবে।'

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ছবি: স্টার

ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রাকিব বলেন, 'ইন্টারিম সরকারকে আহ্বান জানাই—সরকারিভাবে ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করুন। না হলে জনগণ নিজেরাই তা বয়কট করবে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে ইসরায়েলি পণ্যের বিকল্প উৎপাদন করতে হবে।'

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের জবি শাখার সেক্রেটারি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, 'আমরা মুসলিম জাতি, খালিদ বিন ওয়ালিদের উত্তরসূরি। কিন্তু আমরা তা ভুলে গেছি। আজ আমরা শুধু ফতোয়াবাজিতে ব্যস্ত, যার সুযোগে ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলিম ভাই-বোনদের হত্যা করছে। আমি মুসলিম যুবকদের জাগরণের আহ্বান জানাচ্ছি।'

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা হিমেল বলেন, 'ইসরায়েলের আগ্রাসন যুগের পর যুগ ধরে চলছে। স্বাধীনতার নামে তারা ফিলিস্তিনে নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। তথাকথিত শান্তিকামী জাতিসংঘ, ওআইসি এবং পশ্চিমা বিশ্ব চুপ করে আছে বলেই এই আগ্রাসন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।'

সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, 'ইসরায়েলি গণহত্যার মদদদাতা যুক্তরাষ্ট্র। এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে আমরা মার্কিন দূতাবাসে স্মারকলিপি দেব। একইসঙ্গে সৌদি আরবের নিস্ক্রিয় ভূমিকার কারণে তাদের দূতাবাস এবং বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।'

মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ইসরায়েলি বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। ছবি: স্টার

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh demands $4.52 billion in financial claims from Pakistan

"We raised the historical unsettled issues with Pakistan, including a formal public apology," says foreign secy

1h ago